পঞ্চায়েত ভোটে সিঙ্গুর দখল রাখল তৃণমূলই। গ্রাফিক্স: শৌভিক দেবনাথ।
লোকসভা ভোটে ধাক্কা খেয়ে বিধানসভায় ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। সিঙ্গুর বিধানসভায় সেই বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলের ধারাই বজায় রাখল তৃণমূল। সিঙ্গুর এলাকার ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতই দখল করল তৃণমূল। ওই এলাকার পঞ্চায়েত সমিতির ৪৮টি আসনের মধ্যে ৪৭টিতে জয় পেয়েছে শাসকদল। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই রাজ্যে তৃণমূলের উত্থান। সেই সিঙ্গুরের জমিতে শুধুই ঘাসফুল ফুটল। রাত ৯টা পর্যন্ত জেলা পরিষদের তিনটি আসনেও এগিয়ে তৃণমূল।
মমতার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার সিঁড়ি হয়েছিল সিঙ্গুরের আন্দোলন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে সেই সিঙ্গুরেই জমি হারায় রাজ্যের শাসকদল। হুগলি লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী হয়ে জিতেছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। ৭২ হাজারেরও বেশি ব্যবধানে জেতেন লকেট। ২০০৯ এবং ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে এই হুগলি লোকসভা আসনে তৃতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। সেখান থেকে ২০১৯ সালে সটান প্রথম স্থানে বিজেপি। এর মধ্যে সিঙ্গুর বিধানসভা এলাকা থেকে লকেট এগিয়ে ছিলেন ১০ হাজারের বেশি ভোটে। সিঙ্গুরে মমতার আন্দোলনে প্রথম থেকেই ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তাঁকে ‘মাস্টারমশাই’ নামেই চেনে সিঙ্গুর। দীর্ঘ সময়ের সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথকে প্রার্থী না করে মমতা আস্থা রেখেছিলেন হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নার উপরে। তাঁকে সিঙ্গুর বিধানসভার প্রার্থী করেন। আর বেচারামের ছেড়ে আসা আসন হরিপালে প্রার্থী হন তাঁর স্ত্রী করবী মান্না। তার পরেই ক্ষুব্ধ রবীন্দ্রনাথ যোগ দেন বিজেপিতে এবং প্রার্থীও হন। এই ঘটনায় তৃণমূলের একাংশ সিঁদুরে মেঘ দেখেছিলেন। প্রশ্ন ওঠে, সিঙ্গুর আন্দোলনের অন্যতম কারিগর পাশে না থাকলে লড়াইটা কি সহজ হবে মমতার পক্ষে?
ভোটের ফলাফল বেরোনোর পর দেখা যায়, শুধুমাত্র সিঙ্গুরের জমি ধরে রাখাই নয়, বিজেপির হয়ে দাঁড়ানো রবীন্দ্রনাথের থেকে ২৫ হাজার ৯১২ ভোটে জয়ী হয়েছেন বেচারাম। হরিপালে তাঁর ছেড়ে যাওয়া আসনে ২৩ হাজার ৭১ ভোটের নিরাপদ ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন বেচারামের স্ত্রী করবী। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সেই জয়ের ধারাই অব্যাহত রইল ২০২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও।