জেলবন্দি টোটন বিশ্বাসের পাড়ায় কথামৃত বিলি পুলিশের। — নিজস্ব চিত্র।
ধর্মের কাহিনি ‘চোরা’ মানে না। তাই বলে কি পুলিশ পিছপা হবে! সে কারণেই সাধারণতন্ত্র দিবসে এক দুষ্কৃতীর পাড়ায় ‘কথামৃত’ বিলি করলেন পুলিশকর্মীরা। বৃহস্পতিবার এই ছবি দেখা গিয়েছে হুগলির চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরে। সেখানকার ‘ভূমিপুত্র’ টোটন বিশ্বাস এলাকায় দুষ্কৃতী হিসাবেই পরিচিত। নানা অভিযোগে সেই টোটন এখন মেদিনীপুর সংশোধনাগারে বন্দি। বৃহস্পতিবার তাঁর পাড়ায় পুলিশ খুলেছে একটি ক্যাম্পও।
খুন, ডাকাতি, তোলাবাজি-সহ নানা অভিযোগের খাঁড়া মাথার উপর ঝুলছে টোটনের। গ্রেফতারের আগে এলাকায় দলবল নিয়ে দেখা যেত তাঁকে। জেলা পুলিশের একটি সূত্র বলছে, হুগলি জেলার অন্ধকার জগতের অন্যতম মাথা ছিলেন তিনি। নিজের ‘গড়’ রবীন্দ্রনগরেও তাঁর ভাল প্রভাব ছিল।
গত বছর অগস্ট মাসের শুরুতে বন্দি টোটনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল চুঁচুড়ার ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে। সেখানে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় এক দল দুষ্কৃতী। তাতে গুরুতর জখম হন টোটন। তড়িঘড়ি তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে স্ট্রেচারে শুয়ে টোটন অভিযোগ করেছিলেন, বাবু পাল নামে অন্য এক দুষ্কৃতীর দলবল গুলি করেছে তাঁকে। ওই ঘটনায় ‘বদলা’ নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, টোটন গ্রেফতার হলেও তাঁর দলের অনেকেই এখনও ‘সক্রিয়’। এমনকি, এলাকার হারানো জমি ফেরানোর চেষ্টাও করছে কেউ কেউ। বৃহস্পতিবার টোটনের পাড়া সেই রবীন্দ্রনগরেই একটি স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের উদ্বোধন করলেন চন্দনগরের পুলিশ কমিশনার অমিত পি জাভালগি। রবীন্দ্রনগরের পরিত্যক্ত মঙ্গল পাণ্ডে পুলিশ আবাসনে খোলা হয়েছে ওই ক্যাম্পটি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে ১ জন এসআই, ১ জন এএসআই, ৬ জন কনস্টেবল এবং ৪ জন সিভিক পুলিশকর্মী থাকবেন আপাতত।
সিপি অমিত বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনগর ভুল কারণে পরিচিতি পেয়েছে। এলাকায় বহু শিক্ষিত এব ভাল মানুষ আছেন। মানুষের পাশে থাকা এবং তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের কর্তব্য।’’ সেই ক্যাম্প উদ্বোধনের পর এলাকার প্রবীণদের হাতে ‘কথামৃত’ এবং ছাত্রছাত্রীদের হাতে অভিধান তুলে দেওয়া হয়। সাধারণততন্ত্র দিবসে চন্দননগর পুলিশের পক্ষ থেকে সূচনা করা হয়েছে অনলাইন পরিষেবারও।