নওশাদ সিদ্দিকির মুক্তির দাবিতে কলকাতা অচল করার হুমকি পীরজাদা কাশেম সিদ্দিকির। — নিজস্ব চিত্র।
ধর্মতলার ঘটনায় আপাতত পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন ভাঙড়ের বিধায়ক নওয়াদ সিদ্দিকি। তাঁকে মুক্তি না দিলে এ বার কলকাতা অচল করে দেওয়ার হুমকি দিলেন ফুরফুরা শরিফের আর এক পিরজাদা কাশেম সিদ্দিকি। সোমবার হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় ফুরফুরা শরিফে ছিল আইএসএফ-এর রাজ্য কমিটির বৈঠক। সেখানে এই মন্তব্য করেন কাশেম। যদিও তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতা করেছে তৃণমূল।
সোমবার কাশেম হুমকি দিয়েছেন, নওশাদকে মুক্তি না দিলে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন। তিনি বার্তা দেন, ‘‘আমাদের যত ভক্ত আছেন, হিন্দু, মুসলমান, জৈন, খ্রিস্টান, দলিত, আদিবাসী, আপনারা প্রস্তুতি নিন আগামী দিনে কলকাতা আসার জন্য।’’ এর পর তিনি হুমকি দেন, ‘‘আমরা কলকাতার রাজপথ অচল করে দেব।’’ নওশাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। এর পর তাঁর সংযুক্তি, ‘‘আগামী দিনে আমরা পিরসাহেবেরা কলকাতা আসব। কত ওঁর পুলিশ আছে আর কত ওঁর লাঠি আছে দেখাবেন।’’
কাশেমের এ হেন মন্তব্যের বিরোধিতা করেছেন তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। তাঁর মতে, নওশাদের গ্রেফতার ‘স্বাভাবিক’ ঘটনা। পুলিশ নওশাদ এবং তাঁর অনুগামীদের রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করলেও তাঁরা তা করেননি বলে অভিযোগ করেছেন কুণাল। পুলিশকে আইএসএফ সমর্থকেরা আক্রমণ করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন কুণাল। তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রশাসনিক কারণেই নওশাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ধর্মগুরুদের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়াটা বাঞ্ছনীয় নয়।’’
এ নিয়ে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বিঁধেছেন তৃণমূলকেই। তাঁর মতে, ‘‘রাজনীতিতে ধর্মসংক্রান্ত বিষয় এত সামনে এসে গেল তৃণমূলের রাজত্বেই। এটা পশ্চিমবঙ্গে ছিল না। কেউ কল্পনা করতে পারেননি। মানুষের কাজে ব্যর্থ হয়ে বিজেপি এবং তৃণমূল দু’দল মিলে এমন একটা পরিবেশ তৈরি করছে, যেখানে মানুষে মানুষে বিরোধ তৈরি হয়ে যায়। যে কোনও দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি করার অধিকার আছে।’’ নওশাদের গ্রেফতারির সমালোচনা করেছেন তিনি। তবে এ ভাবে হুমকি দেওয়াটাও ‘সমীচীন নয়’ বলেও জানিয়েছেন তিনি।
পিরজাদার হুমকি নিয়ে বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘আমাদের লক্ষ রাখতে হবে, ধর্ম এবং রাজনীতি যেন মিশে না যায়। আমরা রাজনৈতিক অবস্থানগত ভাবে নওশাদকে গ্রেফতারের বিরুদ্ধে।’’