অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেলেন নোভাক জোকোভিচ। ছবি: রয়টার্স
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে একের পর এক জয় পেলেও নোভাক জোকোভিচের কাছে প্রত্যেক ম্যাচেই কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল চোট। সোমবার চতুর্থ রাউন্ডের ম্যাচে অ্যালেক্স ডি’মিনরকে স্ট্রেট সেটে হারালেন সার্বিয়ার খেলোয়াড়। সেখানেও তাঁকে লড়তে হল চোটের বিরুদ্ধে। তা সত্ত্বেও অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্সকে হারালেন ৬-২, ৬-১, ৬-২ গেমে। এই নিয়ে ১৩ বার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলেন তিনি। গ্র্যান্ড স্ল্যামের কোয়ার্টারে এই নিয়ে ৫৪ বার।
ম্যাচ শুরুর আগেই এ দিন জোকোভিচকে দেখা যায় বাঁ পায়ে মোটা করে স্ট্র্যাপ বেঁধে নামতে। বোঝাই গিয়েছিল, চোট যাতে না সমস্যায় ফেলে, তার জন্যেই এই ব্যবস্থা। আগের দু’টি ম্যাচের মাঝে কোর্টে ট্রেনারকে ডেকে শুশ্রূষা করিয়েছিলেন জোকোভিচ। এ দিন অবশ্য কোর্টে চিকিৎসককে ডাকতে হয়নি। কারণ তাঁর বিপক্ষে এমন এক খেলোয়াড় ছিলেন, যিনি খুব বেশি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলেন না। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট নিয়েও জোকোভিচের কোর্ট কভারেজ দেখলে অবাক হতে হয়। যে ভাবে সারা কোর্টে দৌড়ে বেড়ালেন, দেখে মনেই হয়নি তাঁর কোনও চোট রয়েছে। অনায়াস দক্ষতায় একের পর এক রিটার্ন করলেন।
সোমবারের ম্যাচে প্রথম সেটে দুই খেলোয়াড়ই একে অপরকে মেপে দেওয়ার দিকে এগোচ্ছিলেন। প্রথম পাঁচটি গেমে প্রত্যেকেই নিজেদের সার্ভ ধরে রাখেন। জোকোভিচ প্রথম সার্ভ ভাঙেন ষষ্ঠ গেমে গিয়ে। পর পর তিন বার পয়েন্ট পেয়ে ৪০-০ এগিয়ে যান জোকোভিচ। অ্যালেক্সের রিটার্ন নেটে আছড়ে পড়তেই গেম নিশ্চিত করেন সার্বিয়ার খেলোয়াড়। পরের গেমে নিজের সার্ভিস ধরে রাখেন। অষ্টম গেমে গিয়ে আবার অ্যালেক্সের সার্ভ ভেঙে সেট পকেটে পুরে নেন তিনি। জোকোভিচের শক্তিশালী রিটার্নের কোনও জবাব ছিল না অস্ট্রেলিয়ার অ্যালেক্সের কাছে।
দ্বিতীয় সেটের শুরুতেই অ্যালেক্সকে ব্রেক করেন জোকোভিচ। প্রথম ব্রেক পয়েন্ট বাঁচিয়েছিলেন অ্যালেক্স। দ্বিতীয় বার পারেননি। চতুর্থ গেমে আবার ব্রেক করেন জোকোভিচ। টানা আটটি গেম জিতে জোকোভিচ তখন প্রবল আত্মবিশ্বাসী। পরের গেমে নিজের সার্ভ ধরে রেখে জোকোভিচ এগিয়ে যাওয়ার পর মনে হচ্ছিল এই সেটে একটিও গেম পাবেন না অ্যালেক্স। তবে ষষ্ঠ গেমে নিজের সার্ভ ধরে রাখেন তিনি। পরের গেমেই সেট চলে আসে জোকোভিচের পকেটে।
তৃতীয় সেটেও চলে জোকোভিচের শাসন। প্রথম গেমেই অ্যালেক্সকে ব্রেক করেন জোকোভিচ। এগিয়ে যান ৪-০ গেমে। তার পরে একটি গেম জেতেন অ্যালেক্স। তাতে অবশ্য লাভ হয়নি। অষ্টম গেমে ম্যাচ জিতে নেন জোকোভিচ।
ম্যাচের পরে সার্বিয়ার খেলোয়াড় বলেছেন, “আমি স্ট্রেট সেটেই ম্যাচটা জিততে চেয়েছিলাম। তবে কোর্টে কী হবে সেটা তো আগে থেকে বোঝা যায় না। প্রথম চার-পাঁচটা গেমে ভাল লড়াই হয়েছে। প্রথম সেটে ওর সার্ভ ভাঙার পর থেকেই অনেক খোলা মনে খেলতে শুরু করে। আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠি। দ্বিতীয় সেটের শেষের দিকে এবং তৃতীয় সেটের শুরুর দিকে একটু নার্ভাস হয়ে পড়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, যথেষ্ট পরিমাণে সুযোগ কাজে লাগাতে পারছি না। যে হেতু টেনিস খুব দ্রুত একটা খেলা, তাই যে কোনও মুহূর্তে সব বদলে যেতে পারে। ভাল লাগছে শেষ পর্যন্ত নিজের ফোকাস ধরে রাখতে পেরে। বছরের সবচেয়ে ভাল ম্যাচটা আজই খেললাম।”
চতুর্থ রাউন্ডে উঠেছেন আন্দ্রে রুবলেভ। পঞ্চম বাছাই রুবলেভ ৬-৩, ৩-৬, ৬-৩, ৪-৬, ৭-৬ হারিয়েছেন নবম বাছাই হোলগার রুনকে। অ্যান্ডি মারেকে হারানো রবার্ত বাউতিস্তা আগুত ২-৬, ৬-৪, ২-৬, ৫-৭ হেরে গিয়েছেন আমেরিকার টমি পলের কাছে। মহিলাদের সিঙ্গলসে বিদায় নিয়েছেন চতুর্থ বাছাই ক্যারোলিন গার্সিয়া। অবাছাই মাগডা লিনেটের কাছে ৬-৭, ৪-৬ হেরেছেন। পঞ্চম বাছাই আরিন সাবালেঙ্কা উঠেছেন কোয়ার্টারে। বেলিন্ডা বেনচিচকে হারিয়েছেন ৭-৫, ৬-২ গেমে।
মিক্সড ডাবলসে জিতেছেন সানিয়া মির্জা এবং রোহন বোপান্না। ভারতীয় জুটি ৬-৪, ৭-৬ হারিয়েছেন আরিয়েল বিহার এবং মাকোতো নিনোমিয়া জুটিকে।