মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
রেড রোডে নেতাজির জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে আরও এক বার ‘দিদির দূত’ কর্মসূচি নিয়ে মুখ খুললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত কয়েক দিনে ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে গিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভের মুখে পড়েছিলেন তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে সোমবার মমতা খানিক স্বগতোক্তির সুরেই বলেন, “রাস্তা দিয়ে গেলে মানুষ কিছু বলবে না, তা নয়। ক্ষোভ থাকতেই পারে। মানুষের কিছু জানানোকে বিক্ষোভ বলে না।” বিরোধীরা জনপ্রতিনিধিদের ঘিরে জনগণের এই ক্ষোভকে শাসকের বিরুদ্ধে ‘অনাস্থার প্রতিফলন’ বলে দাবি করলেও, মুখ্যমন্ত্রীর কথাতেই স্পষ্ট যে, তিনি এগুলোকে ‘বিক্ষোভ’ হিসাবে মানতে নারাজ। এ বিষয়ে অবশ্য আগেও মুখ খুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছু দিন আগে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির সভায় ‘দিদির দূত’দের ঘিরে বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বলেন, “সমস্যা থাকলে নিশ্চয়ই বলবেন, সমাধান হবে। কারও কথা শুনে কুৎসা-অপপ্রচারে কান দেবেন না।'
নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর কথা স্মরণ করতে গিয়ে তিনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নাম না করে তাদের সমালোচনা করেন। অভিযোগের সুরে তিনি জানান, উত্তরপ্রদেশ কিংবা অন্য বিজেপি শাসিত রাজ্যে কোনও ঘটনা ঘটলে কেন্দ্রীয় দল পাঠানো হয় না। কিন্তু বাংলায় আরশোলা কামড়ালেও কেন্দ্রীয় টিম পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন একতার কথা, সম্প্রীতির কথা। রবীন্দ্রনাথ, নেতাজি, নজরুল, গান্ধীর নাম করে তিনি বলেন, “প্রত্যেকের সুর একটাই। হাজারটা ফুল নিয়ে যখন মালা তৈরি হয়, তখন মনে থাকে না সেটা হিন্দুর ঘরের ফুল, না কি মুসলমান ঘরের ফুল।”
নিজেকে ‘গর্বিত ভারতবাসী’ বলার পাশাপাশি বাঙালি হিসাবেও যে তাঁর আলাদা একটা গর্বের জায়গা রয়েছে, তা-ও জানান তিনি। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জয় হিন্দ স্লোগান কার? বন্দেমাতরম কার? জনগণমন অধিনায়ক জয় হে কার?” এরপরই তাঁর সংযোজন, ‘‘যাঁদের এত কিছু রয়েছে, তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে হলে একটু সৌজন্য দেখাতে হয়।” কারও নাম না করলেও তিনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের উদ্দেশেই এই কথা বলেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের ‘শহিদ এবং স্বরাজ’ নামকরণ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও সমালোচনা করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে কারও নাম না করেই তিনি বলেন, “শহিদ এবং স্বরাজ দ্বীপের নাম নেতাজি দিয়েছিলেন। অন্য কেউ দেননি।”