পরিদর্শন: তদন্তে ডোমজুড়ের বিডিও ও পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
‘সবুজসাথী’ প্রকল্পে সাইকেল দেওয়ার বিনিময়ে ডোমজুড়ের কোলড়া হাই স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের থেকে মাথাপিছু ১০০ টাকা করে নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় তদন্তে নামল পুলিশ প্রশাসন। শুক্রবার স্কুলে যান পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। প্রশাসনের নির্দেশ মতো এ দিন থেকেই ছাত্রছাত্রীদের ওই টাকা ফেরানো শুরু করেছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই ব্লকে সাইকেল বিলির তদারকিতে থাকা নোডাল অফিসারকে কর্তব্যে গাফিলতির জন্য শোকজ় করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
কার নির্দেশে টাকার বিনিময়ে সরকারি প্রকল্পের সাইকেল বিলি হচ্ছিল, তা নিয়ে তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, পড়ুয়াদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া যাবে না। কিন্তু এই স্কুলে সাইকেল দেওয়ার বিনিময়ে পড়ুয়াপ্রতি একশো টাকা করে নেওয়া হচ্ছিল। পুলিশকে তদন্ত করে ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল তাদের টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে স্কুলকে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সোনালি মৈত্রের দাবি, ‘‘টাকার বিনিময়ে সাইকেল দেওয়ার সিদ্ধান্ত আমার নয়। আমি কিছু বলব না। যা বলার পরিচালন সমিতি বলবে।’’ স্কুল সভাপতি আলাউদ্দিন লস্করের পাল্টা দাবি, ‘‘এই সিদ্ধান্ত প্রধান শিক্ষিকার।’’
বিডিও গার্গী দাস বলেন, ‘‘আমরা এক সপ্তাহ আগে স্কুলের হাতে সাইকেল তুলে দিই। এটা ঠিক যে ব্লক অফিস থেকে এত সাইকেল স্কুল পর্যন্ত আনার খরচ আছে। কিন্তু সেই টাকা কী ভাবে জোগাড় হবে, তা স্কুলকেই ভাবতে হবে।’’
ব্লক প্রশাসন ও স্কুল সূত্রের খবর, দশম শ্রেণির ২৮০ জন ছাত্রছাত্রীর মধ্যে বিলি করার জন্য এক সপ্তাহ আগে ব্লক অফিস থেকে সাইকেল দেওয়া হয় স্কুলে। গত শনিবার থেকে সাইকেল বিলি শুরু হয়। অভিভাবকদের অভিযোগ, স্কুল চত্বরেই টেবিল-চেয়ার পেতে বসে কিছু লোক পড়ুয়াদের কাছ থেকে একশো টাকা করে নিয়ে সাইকেল দিচ্ছিলেন। কয়েকদিন ধরে এটা চলার পরে বৃহস্পতিবার অভিভাবকেরা প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান। ভণ্ডুল হয়ে যায় সাইকেল বিলি। তবে, মোট ২১৩ জন ছাত্রছাত্রীকে টাকার বিনিময়ে সাইকেল দেওয়া হয়ে গিয়েছিল।
শুক্রবার স্কুলে যান ‘সবুজসাথী’ প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার, হাওড়া সদরের মহকুমাশাসক এবং ডোমজুড়ের বিডিও। তাঁদের সঙ্গে ছিল পুলিশও। পড়ুয়া, স্কুল কর্তৃপক্ষ, স্কুল পরিচালন সমিতি এবং অভিভাবকদের সঙ্গে তাঁরা কথা বলেন।
এ দিনই ৫৪ জন ছাত্রছাত্রীকে টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হয় বলে স্কুল সূত্রের খবর। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, বাকিদের টাকাও ফিরিয়ে দেওয়া হবে। বাকি সাইকেলগুলি দ্রুত পড়ুয়াদের মধ্যে বিলি করে দেওয়া হবে।