নাবালিকা মেয়ের সম্ভ্রম রক্ষা করতে গিয়ে দুষ্কৃতীদের মারে প্রাণ হারিয়েছেন বাবা। হাওড়ার শ্যামপুরের ঘটনা নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল। এ নিয়ে মম্তব্য করতে গিয়ে যুবসমাজকে ‘বাড়তি দায়িত্ব’ দিলেন মধ্য হাওড়ার বিধায়ক তথা রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়। তাঁর যুক্তি, বাংলায় যে পুলিশ বাহিনী রয়েছে, তা দিয়ে পাড়ায় পাড়ায় নজরদারি করা সম্ভব নয়। তাই মা-বোনের সম্মান রক্ষার দায়িত্ব নিতে হবে যুব সমাজকে।
রবিবার সন্ধ্যায় শ্যামপুরের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। ওই ছাত্রী সাইকেল চালিয়ে কোচিং সেন্টার থেকে ফেরার সময় তার পথ আটকায় পাড়ার ৩ যুবক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ছাত্রীটির বাবা। অভিযোগ, তিনি মেয়েকে কটূক্তি করার প্রতিবাদ করলে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে প্রথমে এলাকার গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। সোমবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই কাণ্ডে দায়ের হয়েছে খুন এবং পকসো আইন-সহ নানা ধারায় মামলা। অভিযুক্ত ৩ যুবকের মধ্যে এলাকার দুই ভাই রয়েছেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
এ নিয়ে বিরোধীরা আঙুল তুলেছে শাসক দলের দিকে। তাদের অভিযোগ, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। মঙ্গলবার নিহতের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি প্রতিনিধিরা। এই ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন বলে মৃ-তের পরিবারের অনুমতি চেয়েছিলেন। কিন্তু নিহতের স্ত্রী জানিয়েছেন তাঁরা রাজনীতি নয়, বিচার চান। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির সমালোচনা করেছেন তৃণমূল বিধায়ক অরূপ। এর পর হাওড়া বইমেলায় তিনি বলেন, ‘‘এই ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। দোষীদের গ্রেফতারির পর কাস্টেডি ট্রায়াল করে শাস্তি দিতে হবে।’’ তার পর মন্ত্রী তাদের পূর্বসূরি সরকারের উদাহরণ টেনে বলেন, ‘‘আমরা ৩৪ বছরের বাম শাসন দেখেছি। সেখানে ৬ বছরের মেয়ে থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত অত্যাচারের শিকার হত। বর্তমানে পশ্চিম বাংলায় যে পুলিশ বাহিনী আছে, তাতে গ্রামে-গ্রামে, পাড়ায়-পাড়ায় সব কিছু নজরদারি সম্ভব নয়। তাই মা-বোনের সম্মান রক্ষার জন্য যুব সমাজকে দায়িত্ব নিতে হবে। সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’’