এক বিরোধী বিধায়ককে ভয় পাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল। ভাই তথা ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির গ্রেফতারি নিয়ে অবশেষে মুখ খুললেন দলের প্রতিষ্ঠাতা তথা পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি। মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে আব্বাস বলেন, ‘‘এটা গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা। আসলে আইএসএফকে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল সরকার।’’
গত শনিবার ধর্মতলার আইএসএফের সভায় ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। আইএসএফ নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আহত হন দু’পক্ষের বেশ কয়েক জন। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির। তার পর কেটে গিয়েছে চার চারটে দিন। নওশাদের মুক্তির দাবিতে মহানগরের পথে মিছিল করেছে আইএসএফ। অন্য দিকে, নওশাদের মুক্তির দাবিতে বৈঠক করছেন হুগলির ফুরফুরার পিরজাদারা। অদ্ভুত ভাবে এত দিন এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে শোনা যায়নি আইএসএফের প্রতিষ্ঠাতা ‘ভাইজান’ আব্বাসকে। নওশাদ তাঁর দলের এক মাত্র বিধায়ক। তাঁর গ্রেফতারির প্রতিবাদে ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের জোটসঙ্গী সিপিএমও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। তৃণমূল সরকারের নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। এমনকি, পিরজাদারা বিবৃতি দিচ্ছেন। বৈঠক করছেন। কিন্তু ভাইয়ের গ্রেফতারি নিয়ে একটি কথাও বলতে শোনা যায়নি আব্বাসকে। চার দিন পর সংবাদ সংস্থার কাছে এ নিয়ে মন্তব্য করলেন তিনি।
আব্বাসের কথায়,‘‘আমরা জানি না, সে দিন সংঘর্ষ শুরু করেছিল যারা, তারা পুলিশ না কি শাসকদলের সমর্থক ছিল। আইএসএফের একটাই বিধায়ক। তবু পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল ভয় পাচ্ছে।’’ এর পর তাঁর সংযোজন, ‘‘এই ভয়ের কারণ হল ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের অনগ্রসর শ্রেণির মানুষও আজ আইএসএফের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। তাই ওরা আইএসএফকে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। যারা শাসকের ভূমিকায় আছে, তারাই আইন ভেঙে কাজ করে চলেছে।’’উল্লেখ্য, নওশাদের মু্ক্তির দাবিতে বুধবার সভা করছেন ফুরফুরার পিরজাদারা। মঙ্গলবার কলাকাতায় ‘নাগরিক সমাজ’-এর মিছিলে পিরজাদারা উপস্থিত ছিলেন না। তবে বিধায়ক নওশাদ যেহেতু এক জন পিরজাদাও বটে, তাই তাঁর মুক্তির দাবি নিয়ে আলোচনায় বসেন ফুরফুরার পিরজাদারা। আব্রাহাম সিদ্দিকির বাড়িতে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয়েছে যে তালতলা হাটে একটি সভা হবে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি নওশাদের জামিন না হলে তাঁরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যেতে পারেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।