হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ। — নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য আনা এক দুষ্কৃতীকে গুলি করল অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা। শনিবার সকালে এই ঘটনা ঘটেছে হুগলির চুঁচুড়ার ইমামবাড়া হাসপাতালে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এই হামলা কোনও বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর কাজ বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ।
শনিবার বেলা ১১টা নাগাদ চুঁচুড়া হাসপাতালের জরুরি বিভাগে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য আনা হয়েছিল বিচারাধীন বন্দি টোটন বিশ্বাসকে। তাঁর বিরুদ্ধে মাদক মামলা রয়েছে। প্রিজন ভ্যান থেকে টোটনকে নামানোর পর জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওই এলাকাতেই টোটনকে নিশানা করে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায় বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। টোটনের বুকের পাশে একটি গুলি লাগে। প্রাণভয়ে টোটন দৌড়ে গিয়ে প্রিজন ভ্যানে আশ্রয় নেয়। গুলি চালানোর ঘটনায় হাসপাতাল চত্বরে আতঙ্ক তৈরি হয় সেখানে আসা রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়-পরিজনদের মধ্যে। তাঁরা ভয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। সেই সুযোগে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, তিন দুষ্কৃতী ব্যাগে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অপেক্ষা করছিল টোটনের জন্য। আজ যে টোটনকে আদালতে তোলা হবে সেই খবর ছিল হামলাকারীদের কাছে।
টোটনকে দ্রুত অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সঞ্জয় হালদার নামে এক বিচারাধীন বন্দির কথায়, ‘‘কারা মারল জানি না। আমাদের হাসপাতালে আনা হয়েছিল পরীক্ষার জন্য। সেই সময় এক রাউন্ড গুলি চলে। কারা চালিয়েছে জানি না। তবে টোটন বিশ্বাসের পেটে গুলি লেগেছে।’’
টোটন বিশ্বাস। — নিজস্ব চিত্র।
হুগলি জেলার কুখ্যাত দুষ্কৃতীদের মধ্যে অন্যতম টোটন। টোটন বিরোধী একাধিক গোষ্ঠীও রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে টোটনের উপর হামলার পিছনে আরও এক কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশাল দাসের হাত রয়েছে। টোটনের দাদা তারক বিশ্বাসকে খুনের অভিযোগও বিশালের গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও হুগলির আরও দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতী নেপু গিরি এবং রমেশ মাহাতোর সঙ্গেও টোটনের দ্বন্দ্ব রয়েছে। ওই দুই জনই বর্তমানে জেলবন্দি।
যখন গুলি চলেছিল সেই সময়ে হাসপাতালে উপস্থিত থাকা মফিজুল ইসলাম প্রৌঢ় বলেন, ‘‘আচমকাই এমন ঘটে গেল। গুলি যে কোনও লোকের লাগতে পারত। এতে আমরা ভয়ে আছি।’’
মালিকা পাল নামে এক তরুণী বলেন, ‘‘সকলের সামনে যে ঘটনা ঘটল, তাতে তো ভয় লাগারই কথা।’’