তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা কয়েকটি জেলায়। —ফাইল চিত্র।
চৈত্র মাস শেষ হতে বাকি আরও কয়েক দিন। কিন্তু গরমে একেবারে নাজেহাল অবস্থা বঙ্গবাসীর। কয়েক দিন থেকেই সকাল থেকে চাঁদিফাটা গরম এবং অস্বস্তিকর পরিবেশে কাবু হয়ে পড়েছে সারা রাজ্য। বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছেন রাজ্যবাসী। কিন্তু ঝড়বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বরং তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়ে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে কয়েকটি জেলায়। এমনটাই পূর্বাভাস আবহাওয়া দফতরের।
গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু জেলার তাপমাত্রার পারদ ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁতে পারে। দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে চার থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকবে বেশ কয়েকটি জেলায়। বুধবার পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার কিছু এলাকায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই তিন জেলার পাশাপাশি, তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। শুক্রবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় ‘লু’ বইবার সম্ভাবনাও রয়েছে। এই জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকতে পারে শনিবার পর্যন্ত।
সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চললেও বিকেলের পর বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ছয় জেলায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া এবং পশ্চিম বর্ধমান জেলার কয়েকটি এলাকা শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টিতে ভিজতে পারে। চলতি সপ্তাহেই ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘর ছুঁতে পারে কলকাতার তাপমাত্রা। জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় গরমের সঙ্গে বাড়বে অস্বস্তিও। বুধবার সকালে কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের চেয়ে দুই ডিগ্রি বেশি। বুধবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকতে পারে। মঙ্গলবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা স্বাভাবিকের চেয়ে তিন ডিগ্রি বেশি। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৩০ থেকে ৯১ শতাংশ।
তাপপ্রবাহের হাত থেকে রক্ষা পেতে আবহাওয়া দফতরের তরফে কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। রাস্তায় বেরিয়ে বেশি ক্ষণ এক টানা রোদে থাকা যাবে না। হালকা রঙের এবং হালকা সুতির বস্ত্র পরিধান করা বাঞ্ছনীয়। ছাতা ব্যবহার করা অথবা কোনও বস্ত্র দিয়ে মাথা ঢেকে রাখা প্রয়োজন। পর্যাপ্ত জল পান করতে হবে। তার পাশাপাশি ওআরএস এবং লেবুর জল বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার বিকেলে মাত্র কয়েক মিনিটের ঘূর্ণিঝড়ে জলপাইগুড়ি শহর, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে পাঁচ জনের। আহতের সংখ্যা শতাধিক। বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়ে পড়েছেন। ঝড়বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত জলপাইগুড়িতে বুধবার থেকে বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ি জেলার কয়েকটি এলাকায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা বৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে জলপাইগুড়ি জেলার কয়েকটি এলাকায়। জলপাইগুড়ির পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার কয়েকটি এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।