জাতীয় স্তরের যোগাসনে পাঁচ বারের সোনাজয়ী কোন্নগরের সোমনাথ মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময় দিদিমার হাত ধরে যোগাসন শেখা শুরু। রাজ্যের পর জাতীয় স্তরেও শতাধিক পদক জয় এবং পুরস্কারপ্রাপ্তি। এ বার লক্ষ্য— তাইল্যান্ডে আন্তর্জাতিক যোগাসন প্রতিযোগিতায় দেশের নাম উজ্জ্বল করা। কিন্তু সব্জিবিক্রেতার ছেলের সেই লক্ষ্যভেদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থাভাব। তাইল্যান্ডের মঞ্চে নামার সুযোগ এলেও সে দেশে যেতে পারবেন কি? চিন্তায় কপালে ভাঁজ জাতীয় স্তরের যোগাসনে পাঁচ বারের সোনাজয়ী কোন্নগরের সোমনাথ মুখোপাধ্যায়ের।
সদ্যই শেষ হয়েছে জাতীয় যোগাসন প্রতিযোগিতা। ১৪-১৬ নভেম্বর হরিয়ানায় ওই প্রতিযোগিতার ৫টি ইভেন্টে নেমে প্রতিটিতেই সোনার পদক জিতেছেন সোমনাথ। ‘চ্যাম্পিয়ন অফ চ্যাম্পিয়ন’-ও তিনিই। এর পর আন্তর্জাতিক মঞ্চে সুযোগ এলেও অর্থাভাবে তা হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
হুগলির কোন্নগরে এক কামরার মামাবাড়িতে থাকেন সোমনাথেরা। সে ঘরও তাঁর জেতা পুরস্কারে ভরে গিয়েছে। বাবা রাজু মুখোপাধ্যায় সব্জি বিক্রি করেন। তা দিয়ে কোনও মতে সংসার চলে। তাই পড়াশোনার পাশাপাশি যোগাসনে ভর করেই ভবিষ্যৎ গড়তে চান সোমনাথ।
ছোটবেলা থেকেই মামাবাড়িতে থাকেন সোমনাথ। সে সময় যোগাসন শেখানোর জন্য স্থানীয় এক ক্লাবে তাঁকে ভর্তি করে দিয়েছিলেন দিদিমা। স্নাতকস্তরের প্রথম বর্ষের ছাত্র সোমনাথের সেই শুরু! তার পর একে একে জাতীয় প্রতিযোগিতায়ও সেরা হয়েছেন তিনি। এ বার আন্তর্জাতিক মঞ্চে নামার পালা।
আগামী বছরের জুনে তাইল্যন্ডে সেই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আসর বসবে। তবে সেখানে যেতে পারবেন কি? ওই প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত হলেও টাকাপয়সার অভাবে চিন্তায় পড়েছেন সোমনাথ এবং তাঁর পরিবার-পরিজনেরা।
এর আগেও এক বার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় বিদেশে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন সোমনাথ। তবে সে বার অর্থাভাবে হাতছাড়া হয়েছিল সুযোগ। সোমনাথের মা পিঙ্কি দেবী বলেন, ‘‘ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা হয়। হরিয়ানায় খেলতে গেলে সুদে টাকা ধার করেছিলাম। এ বার তাইল্যান্ডে যেতে হলে সরকারি সাহায্য পেলে ভাল হয়।’’ স্থানীয় প্রশাসন অবশ্য সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে। কোন্নগর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন দাস বলেন, ‘‘শুনেছি ভাল যোগাসন করে ছেলেটি। আমার শহরের গর্ব। অনেক পদক পেয়েছে। ভবিষ্যতে পুরসভা থেকে ওর পাশে থাকার চেষ্টা করবে।’’