বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিম । গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নিউ টাউনের যে অভিজাত আবাসনে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমকে ‘খুন’ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, সেই ফ্ল্যাটে এখনও লেগে রয়েছে রক্তের মতো দাগ। গ্লাভ্সের খালি প্যাকেটও পাওয়া গিয়েছে ওই ফ্ল্যাটের ঘর থেকে। ফলে আজিমকে কী ভাবে ‘খুন’ করা হয়েছে, তা নিয়ে রহস্য আরও ঘনাচ্ছে। ফ্ল্যাট থেকে আরও তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ‘খুনের’ ঘটনার তদন্ত করছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। বৃহস্পতিবার আবার তারা নিউ টাউনের আবাসনে তল্লাশি অভিযান চালায়। সেখান থেকেই গ্লাভ্সের একটি প্যাকেট পাওয়া গিয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে প্যাকেটের মধ্যে গ্লাভ্স ছিল না। কেন ওই ঘরে গ্লাভ্সের প্রয়োজন পড়ল, সেই প্রশ্ন উঠেছে। তদন্তকারীদের প্রাথমিক অনুমান, অপরাধের প্রমাণ লুকোতেই গ্লাভ্স ব্যবহার করা হয়েছিল।
শুধু গ্লাভ্সের প্যাকেট নয়, ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে রক্তের মতোই কিছু দাগও মিলেছে। সূত্রের খবর, ফ্ল্যাটের দরজার পাশে, খাটের কোণে দাগ রয়ে গিয়েছে এখনও। তবে অনেকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ায় দাগ রক্তের কি না, তা নিয়ে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত হতে পারছেন না তদন্তকারীরা। তা পরীক্ষা করে দেখা হবে। যদিও প্রাথমিক ভাবে দেখে মনে হচ্ছে, সেগুলি রক্তের দাগই।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবারই আজিম ‘খুনের’ ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে এক সন্দেহভাজন যুবককে আটক করেছে সিআইডি। সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা ওই যুবকের নাম জুবের। সূত্রের খবর, আজিম ‘খুনের’ ঘটনায় ইতিমধ্যে বাংলাদেশ পুলিশ যে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে, তাঁদের এক জন এই জুবেরের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। এ ছাড়া, নিউ টাউনের আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজে ট্রলি ব্যাগ বার করতে দেখা গিয়েছে। আজিমের ‘দেহ লোপাট’ করতে ট্রলি ব্যবহার করা হয়েছিল কি না, তার সঙ্গে জুবেরের কোনও যোগ আছে কি না, তদন্তকারীরা তা খতিয়ে দেখছেন। তাঁকে জেরা করা হচ্ছে।
গত ১২ মে বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসা করাতে কলকাতায় এসেছিলেন আজিম। বরাহনগরে এক বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন তিনি। সেখান থেকে দু’দিন পরে নিখোঁজ হয়ে যান। ১৮ তারিখ নিখোঁজ ডায়েরি করেন ওই বন্ধু। আজিমের পরিবারের তরফে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয় ভারত সরকারের সঙ্গে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার জানিয়ে দেন, ভারত সরকারের থেকে পাওয়া তথ্য থেকে তাঁরা জানতে পেরেছেন যে, খুন হয়েছেন আজিম। যদিও, তাঁর দেহ মেলেনি। তথ্যের ভিত্তিতে তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। খুনের কারণ স্পষ্ট নয়। পশ্চিমবঙ্গেও সমান্তরাল ভাবে এই ঘটনার তদন্ত চলছে। উঠে এসেছে নিউ টাউনের আবাসনের নাম। আজিম সেখানেই ছিলেন বলে তদন্তকারীদের ধারণা।