বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিম। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বাংলাদেশের সংসদ সদস্য ‘খুনের’ ঘটনায় এ বার পশ্চিমবঙ্গ থেকে এক জনকে আটক করল রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। সন্দেহভাজন ওই যুবক সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা বলে খবর। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘খুনে’ অভিযুক্ত এক জন এই যুবকের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সূত্র ধরেই যুবকের কাছে পৌঁছন সিআইডির গোয়েন্দারা। আপাতত তাঁকে আটক করে জেরা শুরু হয়েছে। ওই সংসদ সদস্যের ‘দেহ লোপাট’ করা হয়েছিল কি না, তদন্তকারীরা তা খতিয়ে দেখছেন।
নিউ টাউনের যে আবাসনে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনওয়ারুল আজিমকে খুন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে, অভিযুক্তদের ট্রলি নিয়ে বেরোতে। ইতিমধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। তাঁরাও ছিলেন ওই ফুটেজে। যে হেতু এখনও আজিমের দেহ পাওয়া যায়নি, তাই প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, ট্রলির মাধ্যমে তাঁর দেহ লোপাট করা হয়ে থাকতে পারে।
বৃহস্পতিবার যে সন্দেহভাজনকে আটক করেছে এ রাজ্যের সিআইডি, তাঁর নাম জুবের। তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, আজিম-খুনে অন্যতম মূল এক অভিযুক্ত জুবের নামের যুবকের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই প্রমাণ মিলেছে। ট্রলির মাধ্যমে দেহ লোপাট করা হয়েছিল কি না, তার সঙ্গে এই জুবেরের কোনও যোগ রয়েছে কি না, গোয়েন্দারা তা খতিয়ে দেখছেন। জুবেরকে জেরা করে এই সংক্রান্ত তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।
আওয়ামি লিগের সংসদ সদস্য আজিম গত ১২ মে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন। প্রথমে বরাহনগরে এক বন্ধুর বাড়িতে উঠেছিলেন। কিন্তু দু’দিন পর সেই বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে যান তিনি। গত ১৪ মে থেকেই মোবাইলে আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। যে বন্ধুর বাড়িতে আজিম উঠেছিলেন, তিনি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। সংসদ সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে তাঁর পরিবারের সদস্যেরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয় ভারত সরকারের সঙ্গে। তার পরেই শুরু হয় আজিমের খোঁজ। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার জানিয়ে দেন, খুন হয়েছেন আজিম। যদিও, তাঁর দেহ মেলেনি।
বুধবার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসনে পৌঁছয় নিউ টাউন থানার পুলিশ। যে ফ্ল্যাটে আজিম ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে, সেই ফ্ল্যাটে রক্তের দাগ মিলেছে। সংগ্রহ করা হয়েছে আঙুলের ছাপ এবং রক্তের দাগের নমুনা। তার পর বৃহস্পতিবার এক সন্দেহভাজনকে আটক করল সিআইডি।