সুষ্ঠু ভাবে শিবির পরিচালনার জন্য ১১টি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। — ফাইল চিত্র।
আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। রাজ্য সরকারের ৩৭টি প্রকল্প এবং পরিষেবা পাওয়ার জন্য এই শিবিরগুলিতে আবেদন করা যাবে। সেই শিবির পরিচালনার জন্য শনিবার কিছু নির্দেশ (এসওপি) দিয়েছে নবান্ন। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগের মতো একগুচ্ছ আবেদন গ্রহণ করা হবে না। সেই সঙ্গে ষুষ্ঠু ভাবে শিবির পরিচালনার জন্য ১১টি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নবান্নের তরফে। বলা হয়েছে, উৎসবের আবহেই আয়োজন করতে হবে এই শিবিরের।
রাজ্যে এই নিয়ে নবম বার ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির আয়োজিত হচ্ছে। সেখানে ১৮টি দফতরের ৩৭টি প্রকল্পের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হবে। এই শিবির নিয়ে শুক্রবার জেলা প্রশাসনগুলির সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। সূত্রের খবর, সেখানে সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনেছেন তিনি। তার পরেই শনিবার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। কলকাতার পুর কমিশনার এবং সকল জেলাশাসককে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।
নির্দেশিকায় কী কী রয়েছে? সেখানে বলা হয়েছে, জনগণের সুবিধার কথা ভেবে শিবিরের জায়গা নির্বাচন করতে হবে। স্কুল, কলেজ বা কমিউনিটি হলে শিবির বসাতে হবে, যেখানে বহু মানুষ জড়ো হতে পারেন। এর আগে যে সব এলাকা বা মৌজায় কম শিবির হয়েছে, সেখানে এ বার শিবির করতে হবে। প্রত্যেক পঞ্চায়েতে দুই থেকে তিনটি শিবির গড়তে হবে। তার চেয়ে বেশি শিবির হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত নেবে স্থানীয় প্রশাসন। ওই পঞ্চায়েতের জনসংখ্যা বুঝে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ওয়ার্ড ছোট হলে একাধিক ওয়ার্ডের বাসিন্দার আবেদন একটি শিবিরেই গ্রহণ করা যেতে পারে।
প্রত্যন্ত এলাকার জন্য মোবাইল শিবিরের ব্যবস্থা করতে হবে বলেও নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। মোট শিবিরের ৩০ শতাংশ মোবাইল শিবির হতে হবে। বেশি মানুষ যাতে সুবিধা পান, সেই মতো শিবিরের স্থান, সময়, তারিখ নির্ধারণ করতে হবে। নির্ভুল ভাবে আবেদনকারীদের কাছ থেকে তথ্য গ্রহণ করে আবেদন নথিভুক্ত করতে হবে। নির্দেশিকায় শিবিরের প্রচারের জন্য সমাজমাধ্যমের উপর জোর দিতে বলা হয়েছে।
শিবিরের আগে, পরে এবং তা চলাকালীন সমাজমাধ্যমে প্রচার করর কথা বলা হয়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ভূমিকা নিয়েও নির্দেশ দিয়েছে সরকার। সাধারণ মানুষকে সাহায্যের পাশাপাশি শিবিরে তাদের পণ্য বিক্রির কথাও বলা হয়েছে। কন্যাশ্রী ক্লাবের সদস্যদেরও এই শিবিরে যোগ দিতে বলা হয়েছে। নোডাল বিভাগের তৈরি করা নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে। সব শেষে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, উৎসবের আবহেই ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরের আয়োজন করতে হবে। এই শিবিরে মানুষজনের যাতে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা হয়, সে দিকেও নজর রাখতে হবে।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প চালু করেছিল রাজ্য সরকার। এই নিয়ে নবম বার এই প্রকল্পের শিবির আয়োজিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির সুবিধা পেতে পারেন মানুষ। কোনও সরকারি দফতরে গিয়ে প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করা বা ওই প্রকল্প সংক্রান্ত অন্য কোনও কাজ করার প্রয়োজন পড়ে না। ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবিরে গিয়েই সরকারি যে কোনও প্রকল্পে যে কোনও কাজের আবেদন করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে সব সরকারি প্রকল্পকে এক ছাদের নীচে নিয়ে এসেছে নবান্ন। ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে যে যে আবেদন জমা পড়বে, ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেগুলির ‘প্রসেসিং’ হয়ে যাবে।