মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতালে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে সাসপেন্ড আরও এক জুনিয়র ডাক্তার। স্যালাইনকাণ্ডের জেরে আগেই হাসপাতালের জুনিয়র-সিনিয়র নির্বিশেষে মোট ১২ জন চিকিৎসককে সাসপেন্ড করেছিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তাঁদের মধ্যে ছ’জন ছিলেন জুনিয়র ডাক্তার। শনিবার সেই সংখ্যাটা বেড়ে হল সাত। এ বার সাসপেন্ড করা হল গাইনোকলজি বিভাগের পিজিটি (পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী শ্বেতা সিংহ। এ সব নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আংশিক কর্মবিরতির পর শনিবার তাঁরা ঘেরাও করলেন হাসপাতালের সুপার, অধ্যক্ষ এবং জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ)-কে।
জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, যত ক্ষণ না সাসপেনশন প্রত্যাহার করা হচ্ছে, তত ক্ষণ ঘেরাও কর্মসূচি জারি রাখবেন তাঁরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি, বর্তমান পরিস্থিতিতে হাসপাতালে জেলা এবং স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা এলেই তাঁদের ঘেরাও করা হবে।
ঘেরাও করা হলেও সিএমওএইচ সৌম্যশঙ্কর ষড়ঙ্গী অবশ্য বেলা ৪টে নাগাদ অধ্যক্ষের ঘর থেকে পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান। বেরোনোর সময় তিনি বলেন, ‘‘জাতীয় মহিলা কমিশন এসেছিল। আমরা মিটিংয়ে এসেছিলাম। বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা এডিজি (সিআইডি)-র উদ্দেশে একটা চিঠি দিয়েছেন। প্রিন্সিপাল সেটা পাঠিয়ে দেবেন বলেছেন। আমি মেডিক্যাল কলেজের কোনও পদে নেই। অধ্যক্ষ এবং সুপারের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে গোটা বিষয়টি।’’
ঘেরাও কর্মসূচির বাইরে রাখা হয়েছিল জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদারকে। পড়ুয়াদের বক্তব্য, তিনি তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই এসেছেন। অর্চনারও দাবি, চিকিৎসকদের কোনও দোষ নেই। নিষিদ্ধ স্যালাইনের জন্যই গোটাটা ঘটেছে। অর্চনা বলেন, ‘‘পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়েছে। এই ঘটনায় চিকিৎসকদের কোনও দোষ নেই। স্যালাইন সংস্থাকে বাঁচানোর জন্যই তাঁদের ঘাড়ে দোষ চাপানো হচ্ছে। তবে চিকিৎসকদের আমি আরও দায়িত্বশীল হতে বলব।’’
হাসপাতালে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের গ্রিভ্যান্স রিড্রেসাল কমিটির দুই সদস্য। কমিটির সদস্য সৌরভ দত্ত জানান, তিনি আসলে কোনও কমিটির তরফে আসেননি। এসেছেন একেবারেই ব্যক্তিগত ভাবে। ব্যক্তিগত ভাবেই সরকারের উদ্দেশে তাঁর আর্জি, ‘‘হাত জোড় করে সরকারের কাছে আমাদের বক্তব্য, জুনিয়র ডাক্তারদের সাসপেনশন একেবারেই যুক্তিগ্রাহ্য বলে মনে হচ্ছে না আমাদের। যেখানে যা বলার বলব। আমরা আজ এসেছিলাম আমাদের ছোট ভাইদের পাশে দাঁড়াতে। বিষয়টি সরকারের ভেবে দেখা উচিত বলেই মনে হয় আমাদের।’’