Vaccine

প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীরা টিকা নিলে সকলেরই ভয় কাটবে, মত চিকিৎসকদের

চিকিৎসকদের অনেকেই চাইছেন, খোলাবাজারে আসুক করোনার টিকা। তাঁদের প্রশ্ন, নিজের দায়িত্বে ক্যানসার, হার্টের ওষুধ খেতে পারলে, টিকা কেন নয়?

Advertisement

সোমনাথ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২১ ২০:০৪
Share:

টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অনীহা। পিটিআই

রাজ্যে যথেষ্ট পরিমাণে করোনার প্রতিষেধক পৌঁছেছে। প্রথম দফায় চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ওই প্রতিষেধক নেওয়ার কথা। কিন্তু তা নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেরই অনীহা রয়েছে। যা দেখে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ডাক্তার-নার্সরাই যদি প্রতিষেধক না নেন, তা হলে সাধারণ মানুষ কোন ভরসায় নেবে? চিকিৎসক মহলের একাংশ টিকা খোলাবাজারে আনার পক্ষে সওয়াল করছেন। জনস্বার্থে মানুষের ভয় কাটাতে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী-সহ জনপ্রতিনিধিদের প্রতিষেধক নিতে আহ্বান জানাচ্ছেন তাঁরা। আমলাতন্ত্রের দিকেও অভিযোগের আঙুল উঠছে। যদিও করোনাকে হারাতে সবাইকেই প্রতিষেধক নিতে অনুরোধ জানাচ্ছে চিকিৎসক সংগঠনগুলি। টিকা নিলে ভয়ের কিছু নেই, মত বিশিষ্ট চিকিৎসকদেরও।

Advertisement

গত তিন দিনে প্রায় ৬১ হাজার জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, মঙ্গলবার পর্যন্ত মেরে কেটে ৪৩ হাজার জন টিকা নিয়েছেন। রাজ্যে কেন মুখ থুবড়ে পড়ছে টিকাকরণ কর্মসূচি?

হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ কুণাল সরকার বলছেন, “সবাইকে টিকা নিতেই হবে। জনস্বার্থে প্রচারে আরও জোর দিতে হবে। তালিকায় অনেকের নাম তৈরি রাখতে হবে। যদি ১০০ জনকে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা থাকে, তা হলে ২০০ জনের নামের তালিকা করতে হবে। কারণ স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে, অনেক সময় অনেককেই ব্যস্ত হয়ে পড়তে হয়। পৃথিবীতে সর্বত্র কিছু মানুষের মধ্যে টিকা না নেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। এর মধ্যেও আমাদের লক্ষ্য ছুঁতেই হবে। টিকাকরণের জন্য আরও কেন্দ্র বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে।” খোলা বাজারেও প্রতিষেধক হস্তান্তরের পক্ষে সওয়াল করছেন কুণাল। তিনি বলেন, “নিয়মের বেড়াজাল কাটিয়ে প্রাইভেট রিটেলে টিকা দিতে হবে। একা সরকার সব করতে পারে না। নিজের দায়িত্বে ক্যানসার, হার্টের ওষুধ খেতে পারলে টিকা নিতে পারবেন না কেন? যাঁদের প্রয়োজন আছে, তাঁরা ডাক্তারের কাছে গিয়ে নিয়ে নেবেন।”

Advertisement

কোভিশিল্ড। পিটিআই

বিশিষ্ট চিকিৎসক অর্জুন দাশগুপ্ত আবার মনে করেন, ভয় কাটাতে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রী-সহ জনপ্রতিনিধিদের এগিয়ে আসতে হবে। তাঁরা আগে টিকা নিলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় কমবে বলে মনে করেন তিনি। তাঁর কথায়, “মানুষের মধ্যে একটা ভয় তো থাকবেই। আমাদেরই এগিয়ে এসে উদাহরণ তৈরি করতে হবে।”

করোনার সময় এলাকায় ঘুরে ঘুরে রোগীদের বিষয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ। তিনি বলছেন, “আমাদের মধ্যেও ভয়-ভীতি কাজ করছে। এটা অস্বীকার করা যাবে না। আমাদের এই ভ্যাকসিনের বিষয়ে সঠিক তথ্য জানতে হবে। কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন টিকা শরীরে ঢোকার পর রোগীর শরীরে প্রতিরোধকারী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। তার ফলে রোগ প্রতিরোধ শক্তি গড়ে ওঠে।”

জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টরস (ওয়েস্ট বেঙ্গল)-এর তরফে রাজীব পাণ্ডে বলছেন, “কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে আপাতত চার সপ্তাহের ব্যবধানে দু’টি ডোজ হাতের ওপরের অংশে মাংসপেশিতে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে দেওয়া হবে। কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে দু’টি ডোজ চামড়ার তলায় ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে দেওয়ার কথা রয়েছে। যে কোনও রোগের টিকার ক্ষেত্রেই কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে। টিকা নেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে যদি শরীরে কোনও নতুন কিছু অনুভূতি হয়, তবে অতি দ্রুত সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।”

তবে ভাইরোলজিস্ট অমিতাভ নন্দী এ ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement