অ্যাপেই মিলবে রেশন কার্ড।
এ বার থেকে চাইলে নিজের রেশন কার্ড নিজেই তৈরি করতে পারবেন রাজ্যের সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি তেমনই ব্যবস্থা করেছে রাজ্যের খাদ্য দফতর। পুজোর আগেই এই সংক্রান্ত বিষয় একটি অ্যাপ তৈরি করেছে খাদ্য দফতর। নতুন এই অ্যাপটির নাম দেওয়া হয়েছে, ‘খাদ্যসাথী - আমার রেশন মোবাইলে অ্যাপ’। নতুন এই অ্যাপটির মাধ্যমে যে কোনও ব্যক্তি ঘরে বসে রেশন কার্ড সংক্রান্ত যাবতীয় পরিষেবা পেতে পারবেন। নতুন এই পদ্ধতিতে নয়া রেশন কার্ডের আবেদন থেকে শুরু করে মৃত কোনও ব্যক্তির রেশন কার্ড বাতিল, রেশন কার্ডের ভ্রম সংশোধন করার মত বিষয়ও এই অ্যাপটির মাধ্যমে কার্যকর করা যাবে। খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার সব দফতরকেই ই-গভর্ন্যান্স এর উপর জোর দিতে নির্দেশ দিয়েছে। সেই পর্যায়ে খাদ্য দফতর রেশন পরিষেবার ক্ষেত্রে ই-গভর্ন্যান্স আনার পক্ষে বহু দিন ধরে চেষ্টা চালিয়েছে। বর্তমান যুগে প্রায় প্রত্যেক মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। তাই রেশন পরিষেবার সঙ্গে তাঁদের মোবাইলটিকেও তাঁরা যুক্ত করে দিতে চেয়েছেন। সাধারণ অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোনের গুগ্ল প্লে স্টোর কিংবা আইফোনের অ্যাপ স্টোরে গেলেই খাদ্য দফতরের এই অ্যাপটি সহজেই ডাউনলোড করা যাবে বলে জানিয়েছে খাদ্য দফতরের একটি সূত্র।
নতুন এই অ্যাপটি যে কেবলমাত্র রেশন সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই সাধারণ মানুষকে সাহায্য করবে, তা নয়, গ্রামীণ কৃষকদের জন্য ধান কেনাবেচার জায়গা নির্ধারণের ক্ষেত্রেও এর বড় ভূমিকা থাকবে বলে জানিয়েছেন খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক। কৃষকরা নিজের পছন্দ মতো ধান বিক্রয় কেন্দ্র এবং তারিখ বেছে নিতে পারবেন এই অ্যাপটির মাধ্যমে। খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, কোনও কৃষক সরকারি স্তরে ধান বিক্রি করতে চাইলে তাকে খাদ্য দফতরে নির্দিষ্ট একটি পোর্টালে গিয়ে নিজের নাম নথিভুক্ত করাতে হয়। নাম নথিভুক্ত হওয়ার পর একটি রেজিস্ট্রেশন নম্বর পান সংশ্লিষ্ট কৃষক। সেই রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে ওই অ্যাপটিতে গিয়ে আবেদন করলেই নিজের পছন্দ মতো জায়গায় ধান বিক্রি করার জায়গা ও তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে। এর ফলে ধানের বিক্রয়কেন্দ্র নিয়ে গ্রামীণ কৃষকদের মধ্যে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকে, তা-ও সহজেই মিটিয়ে ফেলা যাবে বলে মনে করছেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা।
নতুন এই অ্যাপটির মাধ্যমে রেশন কার্ড ও ধান বিক্রি সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে ফেলার বিষয়টিকে নিজেদের একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করছেন খাদ্য দফতরের শীর্ষক কর্তারা। কারণ, এত দিন নতুন রেশন কার্ড পেতে কিংবা কার্ড বাতিল করতে বা ভ্রম সংশোধন করতে হাজারো ঝামেলা পোহাতে হত সাধারণ মানুষকে। একই সঙ্গে ধান বিক্রি নিয়েও কৃষকদের অভিযোগের অন্ত ছিল না। নতুন এই ব্যবস্থার ফলে যাবতীয় সমস্যার অবসান হবে বলেই মনে করছেন খাদ্য দফতরের আধিকারিকরা।