বাঘাযতীনের হেলে পড়া সেই বাড়ি নিয়ে মুখ খুললেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। —ফাইল চিত্র।
বাঘাযতীনে চারতলা বাড়ি ভেঙে পড়ার দায় বাম সরকারের উপরেই চাপালেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। জানালেন, ‘পুরনো পাপের বোঝা’ বহন করতে হচ্ছে তাঁকে এবং তাঁদের সরকারকে। বাম আমলে কোনও পরিকল্পনা (প্ল্যানিং) ছাড়াই বাড়ি তৈরি হত বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। জানিয়েছেন, বাঘাযতীনের ফ্ল্যাটটি ভাঙার কাজ চলছে। তিনি এ বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও দিয়েছেন। ওই এলাকার আশপাশের বাসিন্দাদের যাতে সমস্যা না-হয়, তা নিশ্চিত করতে বলেছেন ববি।
বুধবার বাঘাযতীনের ঘটনা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে পুরমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাম আমল থেকে এই পাপের বোঝা আমরা বয়ে চলেছি। কোনও বাড়ির ক্ষেত্রেই তখন প্ল্যানিং হত না। সেই সময়ে অনলাইনে কিছু হত না। ফাইলে সব নথি জমা থাকত। আমরা আসার পর তেমন অনেক ফাইল তো খুঁজেই পাইনি!’’ এ ভাবে কি পুরনো সরকারের ঘাড়ে দায় চাপানো হচ্ছে? ববি বলেন, ‘‘এটা দায় চাপানো নয়। ওরা একটা ট্র্যাডিশন শুরু করে দিয়ে গিয়েছে। আমরা এখনও সেটা পুরোপুরি আটকাতে পারিনি। মানুষ ধীরে ধীরে বুঝছেন। কলোনি এলাকায় কোনও বাড়ির প্ল্যান থাকে না। হাই কোর্টেও সেটা নিয়ে মামলা রয়েছে। একটা পাপ করে দিয়ে গিয়েছে। এখন আমরা প্রায়শ্চিত্তের জন্য সাধারণ মানুষকে তো ঘরছাড়া করে দিতে পারি না! সিপিএম যদি সে সময়ে রাজনীতি না-করত, যদি আরও কড়া হত, তা হলে এই সমস্যা হত না।’’
বাঘাযতীনের বাড়িটি নিয়ে কী ভাবছে পুরসভা? ফিরহাদ জানান, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ইঞ্জিনয়িারদের তত্ত্বাবধানে যাতে ধীরে ধীরে বাড়িটি পুরো ভেঙে ফেলা হয়, সেটা আমি পুরসভাকে বলেছি। আশপাশের লোকের যাতে অসুবিধা না-হয়, সেটাও দেখতে হবে।’’ এই ধরনের সমস্যা ভবিষ্যতে এড়ানোর জন্য সর্বত্র, বিশেষত কলোনি এলাকায় বাড়ির ‘প্ল্যানিং’ পুরসভার কাছে জমা দেওয়ার কথা বলেছেন মেয়র। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বলেছি, বাড়ির প্ল্যান জমা দিন। যাতে আমরা ১৫ দিনের মধ্যে ন্যায্য দামে অনুমোদন দিতে পারি।’’
মঙ্গলবার দুপুরে বাঘাযতীনের বিদ্যাসাগর কলোনিতে একটি চার তলা ফ্ল্যাটবাড়ি হেলে পড়ে। নীচের তলার একাংশ ভেঙে পড়ায় এই বিপত্তি। তবে ওই সময়ে বাড়িটিতে কেউ ছিলেন না। তাই হতাহতের ঘটনা এড়ানো গিয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, বাড়িটির এক দিকের অংশ নিচু ছিল। তারই কাজ চলছিল বলে বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার সকাল থেকে বাড়িটি পুরোপুরি ভেঙে দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। হাইড্রোলিক ল্যাডারের মাধ্যমে বাড়ির জানলা দিয়ে ঢুকে কর্মীরা কাজ এগোচ্ছেন। এলাকায় আতঙ্ক রয়েছে।