(বাঁ দিকে) মেদিনীপুর মেডিক্যালের সিআইডি দল এবং স্যালাইনের বোতল হাতে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে চিকিৎসকেরা (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
মঙ্গলবারের পর বুধবারও স্যালাইন-কাণ্ডে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে জিজ্ঞাসাবাদ করছে সিআইডি। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী নন্দীর ঘরে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সিআইডির দুই আধিকারিক। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার যাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, বুধবার আবার তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়। সেই সঙ্গে আরও কয়েক জনকে ডাকা হয়েছে। অধ্যক্ষের ঘরের সামনে কয়েক জন চিকিৎসককে হাতে ‘রিঙ্গার্স ল্যাকটেট’ (আরএল) স্যালাইনের বোতল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
রাজ্য সরকারের নির্দেশে প্রসূতি মৃত্যু, নিম্নমানের স্যালাইন ব্যবহারের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি। কলকাতা থেকে ডিএসপি পদমর্যাদার এক আধিকারিকের নেতৃত্বে সিআইডির একটি দল তদন্ত করছে। মঙ্গলবার মেদিনীপুর মেডিক্যালের দুই জুনিয়র ডাক্তার, চার জন নার্স এবং সিনিয়র চিকিৎসকদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিআইডির গোয়েন্দারা। পাশপাশি, মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার জয়ন্ত রাউতকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
বুধবার সকাল ১০টা নাগাদ মেদিনীপুর মেডিক্যালে আসে সিআইডি-র দুই সদস্যের দল। তার পর তারা সোজা চলে যায় অধ্যক্ষের ঘরে। সেখানেই জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব চলছে বলে খবর। শুধু চিকিৎসক, নার্স বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নয়, প্রসূতিদের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলছে সিআইডি। মৃত প্রসূতি মামনি রুইদাস এবং রেখা সাউয়ের পরিবারকে ডেকে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে মামনির ননদ রুম্পা দাস বলেন, ‘‘আমাদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল মাতৃমাতে। বাড়ির ঠিকানা ফোন নম্বর নিয়েছে তারা (সিআইডি)।’’ রেখার স্বামী সন্তোষ সাউ বলেন, ‘‘সিআইডি লোকেরা জিজ্ঞাসা করেছিল কবে আমার স্ত্রী ভর্তি হয়েছে, এখন কেমন আছে বাচ্চা কেমন রয়েছে। উত্তরে জানিয়েছি, ডাক্তারবাবুরা বলছেন রেখা একটু ভাল আছে। বাচ্চা এখনও ভাল নেই। ফোন নম্বর এবং ঠিকানা জানতে চেয়েছিল সে গুলো জানিয়েছি।’’ সিআইডি-র এক আধিকারিককে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে।’’ মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদের পর সিআইডি দলের সদস্যেরা বেশ কিছু নথি সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছেন। হাসপাতালের রস্টার, লগবুক, রিঙ্গার্স ল্যাকটেট (আরএল)-এর ব্যাচ নম্বর খতিয়ে দেখা হয়।
মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে গত শুক্রবার এক প্রসূতির মৃত্যুর পরেই তাঁকে দেওয়া আরএল স্যালাইনের গুণমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তার পরই স্বাস্থ্য ভবন একটি ১৩ সদস্যের তদন্তকারী দল গঠন করে। তারা তদন্ত করে প্রাথমিক রিপোর্টও জমা দিয়েছে। তার পরই মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ জানান, এই ঘটনায় আরও তদন্তের প্রয়োজন। স্বাস্থ্য দফতরের তদন্ত কমিটির পাশাপাশি সিআইডি-ও এই ঘটনার তদন্ত করবে।