—প্রতীকী ছবি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের যে-সব পড়ুয়া সাপ্লিমেন্টারি পেয়েছেন, সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা ছাড়াই তাঁদের পাশ করিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ঘিরে শুধু ঘোর বিতর্ক নয়, বিশ্ববিদ্যালয়েও জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে রাত পর্যন্ত ঘেরাও করে রাখেন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র সংগঠন ফেটসু-র এক দল সদস্য।
সাপ্লিমেন্টারি পাওয়া পড়ুয়াদের পরীক্ষা ছাড়াই পাশ করিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ এ দিন সরে এসেও পড়ুয়াদের চাপে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। বেশি রাত পর্যন্ত ফেটসু-র সদস্যদের সঙ্গে উপাচার্যের বৈঠক চলে। ফয়সালা হয়নি। আজ, শনিবার পরীক্ষা সংক্রান্ত বোর্ডের সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক হবে। সেখানে থাকবেন ছাত্র-প্রতিনিধিরাও।
শিক্ষা সূত্রের খবর, এ দিন বৈঠকে উপস্থিত পড়ুয়াদের মধ্যে থেকেই দু’টি মত উঠে আসে। এক পক্ষ জানায়, পরীক্ষা যেন না-হয়। অন্য পক্ষের দাবি, পরীক্ষা হোক। এর পাশাপাশি ছাত্র সংসদের দাবি, ‘ছাত্র স্বার্থে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে’— এমন শব্দবন্ধ কর্তৃপক্ষ কোথাও লিখতে পারবেন না। ৩১ মার্চের মধ্যে সব ফল প্রকাশ করে দিতে হবে। বৈঠক অমীমাংসিত থেকে যায়। উপাচার্য বেশি রাতে বাড়ি ফেরেন। বার বার ফোন এবং মেসেজ করেও ফেটসু-র চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদারের বক্তব্য জানা যায়নি।
গত আট বছরে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সাপ্লিমেন্টারি পাওয়া অন্তত এক হাজার পড়ুয়ার পরীক্ষা এই অতিমারির আবহে আর নেওয়া হবে না বলে বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিভাগের পরীক্ষা কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তা জানানো হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে। বিতর্ক শুরু হয়। যাদবপুরের মতো দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা না-নিয়ে পাশ করিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিস্ময় প্রকাশ করে শিক্ষা জগৎ। শিক্ষক সমিতি জুটা-র সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় এ দিন বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়। ভবিষ্যতে র্যাঙ্কিং এবং অন্যান্য ক্ষেত্রেও এর ছাপ পড়তে পারে। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের পক্ষেও এমন সিদ্ধান্ত ঠিক নয়।’’
উপাচার্য এ দিন প্রথমে জানান, এমন সিদ্ধান্তের কথা তিনি জানতেনই না। ‘‘এ দিনই সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞপ্তিটি ওয়েবসাইট থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। যাঁরা সাপ্লিমেন্টারি পেয়েছেন, তাঁদের সকলের পরীক্ষা নেওয়া হবে,’’ বলেন সুরঞ্জনবাবু। তার পরেই উপাচার্যকে ঘেরাও করে ফেটসু।