অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র
স্কুলের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে তলব করল ইডি। আগামী মঙ্গলবার, ১৩ জুন সকাল সাড়ে ১১টারক সময় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেককে সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠানো হয়েছে। নিয়োগ মামলায় গ্রেফতার তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষের চিঠি সংক্রান্ত মামলায় নাম জড়িয়েছিল অভিষেকের। ওই মামলায় অভিষেককে ইডি এবং সিবিআই জেরা করতে পারবে বলে অনুমতি দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে ইডি সূত্রে খবর, অভিষেককে শুধু কুন্তলের চিঠি সংক্রান্ত বিষয়ে নয়, আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চান ইডির গোয়েন্দারা।
বৃহস্পতিবারই অভিষেককে তলব করে নোটিস পাঠানো হয়েছে ইডির তরফে। ঘটনাচক্রে বৃহস্পতিবার সকালে অভিষেক পত্নী রুজিরা নারুলা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ডেকে পাঠানো হয়েছিল সিজিওতে। প্রায় চার ঘণ্টা জেরার পর বিকেল সাড়ে চারটা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্স থেকে বেরিয়ে আসেন রুজিরা। ইডি সূত্রে খবর, অভিষেককে তলব করে ইডির নোটিস তার পরেই পাঠানো হয়েছে।
অভিষেক এখন নদিয়ায়। তাঁর নবজোয়ার যাত্রার কর্মসূচিতে নিয়ে ব্যস্ত। ১৩ তারিখ অর্থাৎ মঙ্গলবারও জেলায় জেলায় জন সংযোগ কর্মসূচিতেই ব্যস্ত থাকার কথা তাঁর। ইডির ডাকে আসতে হলে সেই কর্মসূচি বন্ধ রেখে কলকাতায় ফিরতে হবে অভিষেককে। যদিও অভিষেক কী করবেন, কবে ফিরবেন সে ব্যাপারে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত কিছু জানাননি তিনি।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সম্প্রতি ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকেও গ্রেফতার করেছে ইডি। যিনি এক সময় অভিষেকের একটি অফিসে কাজ করতেন। অভিষেককে সাহেব বলেও সম্বোধন করেন তিনি। সেই সুজয় এখনও ইডি হেফাজতে। আগামী ১৪ জুন তাঁর হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। অভিষেককে সিজিওতে ডেকে পাঠানো হয়েছে সুজয়ের হেফাজতের মেয়াদ ফুরনোর একদিন আগেই।
আগে যা হয়েছে
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিষেকের নাম প্রথম প্রকাশ্যে আসে বহিষ্কৃত তৃণমূল যুবনেতা কুন্তলের বক্তব্যে। কুন্তল অভিযোগ করেছিলেন, নিয়োগ মামলায় অভিষেকের নাম বলার জন্য তাঁকে চাপ দিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা। এ বিষয়ে প্রথমে আদালতে, পরে হেয়ার স্ট্রিট থানাতেও ইডি এবং সিবিআইয়ের গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান কুন্তল। ঘটনাচক্রে কুন্তল যেদিন এই কথা বলেন, তার আগেরদিনই শহিদ মিনারের কাছে অভিষেক তাঁর সভায় বলেছিলেন, এর আগে যখন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং বিধায়ক মদন মিত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তখন তাঁদেরকে অভিষেকের নাম বলার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল।
পরে কুন্তলের ওই চিঠি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা হলে, সেই মামলা ওঠে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে। তিনি বলেন, শহিদ মিনারের পাদদেশে সভায় অভিষেকর মন্তব্য এবং তার অব্যবহিত পরেই কুন্তলের একই ধরনের অভিযোগ কাকতালীয় হতে পারে না। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এর পর ইডি এবং সিবিআইকে বলেন, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত কুন্তলের চিঠির মামলায় তাঁরা প্রয়োজনে অভিষেককেও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন।