রাজীব সিংহ। ফাইল চিত্র
এক দফায় ৮ জুলাই পঞ্চায়েত ভোট হবে রাজ্যে। ঘোষণা করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার রাজ্যের নতুন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিংহ সাংবাদিক বৈঠক করে দিনক্ষণ ঘোষণা করলেন। মাঝে ঠিক এক মাস সময়। যদিও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, একটিও সর্বদল বৈঠক না ডেকে, কোনও আলোচনা না করেই একতরফা ভোটের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। কমিশনের দাবি, সর্বদলীয় বৈঠক করে ভোটের দিন ঘোষণার নিয়ম নেই। যখন প্রয়োজন, বৈঠক হবে।
বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘‘দার্জিলিং এবং কালিম্পঙে দ্বিস্তর এবং বাকি রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ৮ জুলাই, শনিবার। মনোনয়ন জমা শুরু শুক্রবার, ৯ জুন থেকেই।’’ রাজীব জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকেই রাজ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে যাচ্ছে। ফলে রাত ১০টা থেকে সকাল ৮ পর্যন্ত মিটিং মিছিল করা যাবে না।
পঞ্চায়েত ভোটের তারিখ নিয়ে দীর্ঘ জল্পনা চলছিল রাজ্যে। সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েত ভোটের তারিখ ঘোষণা করেছেন নবনিযুক্ত নির্বাচন কমিশনার। তিনি জানিয়েছেন, ৯ জুন থেকে মনোনয়ন জমা শুরু। ১৫ জুন মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন। ১৭ তারিখ স্ক্রুটিনির শেষ দিন। মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য ২০ জুন পর্যন্ত সময় পাবেন পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থীরা। ভোটগণনা বা ফলঘোষণা কবে তা জানতে চাওয়া হলে রাজীব প্রথমে জানান, সাধারণত ভোটগ্রহণের ১-২ দিন পরে। এ ক্ষেত্রেও নিয়ম অনুযায়ী করা হবে। পরে কমিশন সূত্রে জানা যায়, আগামী ১১ জুলাই গণনা হতে পারে।
৮ জুলাই মানে আষাঢ় মাসের শেষ সপ্তাহ। বাংলায় বর্ষা আসে জুন মাসের মাঝামাঝি। সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ভোট হবে ভরা বর্ষাতেই। আর আগের বারের মতো এ বছরও এক দফাতেই হবে রাজ্যের ২২টি জেলার পঞ্চায়েত ভোট।
মোট ২২টি জেলায় ৩৩১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৮ হাজার ৫৯৪। মোট পঞ্চায়েত আসন ৬৩ হাজার ২৮৩টি। আগামী ৮ জুলাই, শনিবার এই ৬৩ হাজার ২৮৩টি আসনে এক দফাতেই ভোট গ্রহণ করা হবে। তবে বর্ষায় ভোট হওয়ায় গ্রামে ভোট দিতে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।
বুধবারই রাজ্যের নতুন নির্বাচন কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব নিয়েছেন রাজীব। এক সময়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবের পদে ছিলেন। কমিশনার পদে তিনিই ছিলেন নবান্নের প্রথম পছন্দ। বুধবার নবান্নের সুপারিশে সায় দিয়ে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে রাজীবের নিয়োগে সায় দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এর পর কমিশনার পদে শপথগ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের তারিখও ঘোষণা করে দিলেন রাজীব।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে করানোর দাবি করেছিল বিরোধীরা। এ প্রসঙ্গে রাজীবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য পুলিশের উপর ভরসা রাখা উচিত। আমাদের উপর আস্থা রাখুন। প্রস্তুতিতে কোনও গাফিলতি থাকবে না। রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বলব আস্থা রাখতে।’’