জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। — ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ‘সুপারিশ’-এ সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন তাঁর বাড়ির পুরনো পরিচারক। এমনকি, ‘দুর্নীতি’-র টাকা লেনদেন হয়েছে এমন সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন ওই পরিচারকের মা এবং স্ত্রী। বৃহস্পতিবার প্রায় ২০ ঘণ্টা জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাতেই এই তথ্য জেনেছে বলে দাবি ইডির।
ইডির একটি সূত্র জানিয়েছে, জ্যোতিপ্রিয়ের পরিচারকের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, গত ১৭ বছর ধরে রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর বাড়িতে কাজ করছেন তিনি। এখন তিনি কৃষি দফতরের গ্রুপ ডি কর্মী। পরিচারক জানিয়েছেন, জ্যোতিপ্রিয়ের ‘সুপারিশ’-এ ওই চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। এই দাবি করেছে ইডি।
ইডির আরও দাবি, ওই পরিচারক জানিয়েছেন, ‘দুর্নীতি’র টাকা লেনদেন হয়েছে, এমন সংস্থার ডিরেক্টর ছিলেন তাঁর স্ত্রী সুকন্যা দাস এবং মা মমতা দাস। তিনি ইডিকে এ-ও জানিয়েছেন, জ্যোতিপ্রিয়ের নির্দেশেই তাঁদের ওই সংস্থার ডিরেক্টর করা হয়েছিল।
ইডি সূত্রে খবর, ২৬ অক্টোবর জ্যোতিপ্রিয়ের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় তাঁকে এবং তাঁর স্ত্রী-কন্যাকে তিনটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তদন্তকারীদের ধারণা, ওই তিনটি সংস্থার মাধ্যমে ‘কালো টাকা’ লেনদেন হয়েছে। তিন জনেই ওই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ খারিজ করেন। যদিও বাড়িতে তল্লাশির সময় ওই তিন সংস্থার স্ট্যাম্প উদ্ধার করে বাজেয়াপ্ত করেছে বলে দাবি ইডির। সহযোগীরা দাবি করেছেন, ওই তিন সংস্থার মালিকানা রয়েছে জ্যোতিপ্রিয়ের হাতে। ইডির দাবি, তাঁরই নির্দেশে এই সংস্থার ডিরেক্টর করা হয়েছিল পরিচারকের স্ত্রী এবং মাকে।
বৃহস্পতিবার সকালে জ্যোতিপ্রিয়ের সল্টলেকের দু’টি বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে ইডি। নাগেরবাজারে তাঁর পৈতৃক ভিটে এবং আপ্তসহায়ক অমিত দের দু’টি ফ্ল্যাটেও তল্লাশি চলে। অভিযোগ, বিভিন্ন রেশন ডিলার এবং ডিস্ট্রিবিউটরদের সঙ্গে সিন্ডিকেট তৈরি করে কেন্দ্রের পাঠানো ন্যায্যমূল্যের রেশন সামগ্রী বেআইনি ভাবে খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়েছে। ইডির দাবি, জ্যোতিপ্রিয় যখন রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী, তখন এই ‘দুর্নীতি’ হয়েছে। ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের গ্রেফতারির পর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসে। তারই তদন্তে নেমেছে ইডি। প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে টানা তল্লাশির পর বৃহস্পতিবার মাঝরাতে গ্রেফতার হন জ্যোতিপ্রিয়।