গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
তাড়া খেয়ে ফেরার ১৯ দিন পর আবার সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিল ইডি। এ বার ‘রণসজ্জায়’ সজ্জিত হয়ে তৃণমূল নেতার ঘরের তালা ভেঙে ঢোকে তারা। তার পর শাহজাহানের হলুদ রঙের বাড়ির একের পর এক ঘরে ঢুকে চলে তল্লাশি। নামিয়ে আনা হয় সুটকেস। ভাঙা হয়েছে আলমারির তালা। উঁকি দেওয়া হল চিলেকোঠার তাকেও। কিন্তু কিছু জামাকাপড় ছাড়া শাহজাহানের বাড়ি থেকে উল্লেখযোগ্য কিছুই পাননি ইডির আধিকারিকরা। সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শাহজাহানের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিস বলতে বাসনকোসন আর জামাকাপড়।
বুধবার সাতসকালে শাহজাহানের বাড়িতে যান ইডির ছয় আধিকারিক। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দু’জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার অফিসার। এ ছাড়া এক জন আছেন শুধুমাত্র ছবি তোলার জন্য। তাঁরা একের পর এক ঘরে গেলেন। ঘুরে দেখলেন। আসবাবপত্র ঘাঁটতে ঘাঁটতে পৌঁছে যান রান্নাঘরেও। তার মধ্যে আলমারির তালা ভাঙা হয়েছে। সুটকেস নামিয়ে খোলা হয়েছে।
শেখ শাহজাহানের বাড়ির অন্দরমহল। ছবি: সারমিন বেগম।
কিন্তু রান্নাঘরের সিঙ্ক থেকে বাসনকোসন আর আলমারি এবং সুটকেস থেকে জামাকাপড় ছাড়া কিচ্ছু মেলেনি। তল্লাশি চলার সময় এক ইডি আধিকারিককে বলতে শোনা যায়, ‘‘১৯ দিন তো কম নয়।’’
অন্য দিকে, সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে যখন ইডির অভিযান চলছে, তখন তৃণমূল নেতার নামাঙ্কিত বাজারে দেখা গেল সুনসান ছবি। বুধবার সকাল থেকে শাহজাহান মার্কেটের একটি দোকানও খোলেনি। আদালতের নির্দেশে তৃণমূল নেতার বাড়ির সঙ্গে সঙ্গে সন্দেশখালির বাজারেও সিসি ক্যামেরা বসিয়েছিল পুলিশ।
বুধবার শাহজাহানের বাড়িতে হানার সময় রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি রয়েছে রাজ্য পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত র্যাফকে দেখা গিয়েছে। তাঁরা হেলমেট পরিহিত। হাতে লাঠি বা আধুনিক অস্ত্র। শাহজাহানের বাড়ির ফটকে দাঁড়িয়ে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের জওয়ানরা। সঙ্গে রয়েছেন সিআরপিএফ জওয়ানরাও। বাড়ি থেকে বড় রাস্তায় যাওয়ার জন্য রয়েছে এক চিলতে রাস্তা। সেই ১০০ মিটার রাস্তাও পুরোপুরি মোড়া খাকি, জলপাই পোশাক পরিহিত দীর্ঘদেহীদের দিয়ে। বড় রাস্তার দখলও পুরোপুরি নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে। জায়গায় জায়গায় তাঁরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সাধারণ মানুষের আনাগোনাও একেবারেই হাতেগোনা। শাহজাহানের নামে রয়েছে একটি আস্ত বাজার। তারও দখল নিয়েছে রাজ্য পুলিশ এবং সিআরপিএফ।