তাপস মণ্ডল। ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এ বার খোঁজ মিলল জনৈক ‘ঘোষ’বাবুর! এই মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) আদালতে যে চার্জশিট জমা দিয়েছে, তাতে উল্লেখ রয়েছে এই ঘোষের। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের ‘ঘনিষ্ঠ’ তথা বেসরকারি বিএড এবং ডিইএলএড কলেজ কর্তৃপক্ষের সংগঠনের সভাপতি তাপস মণ্ডলকে জেরা করে এই রহস্যময় ঘোষের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে বলে চার্জশিটে দাবি করেছে ইডি।
ইডির জেরায় তাপস জানান, প্রাথমিকে শিক্ষক পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার জন্য তিনি এই ঘোষ পদবিধারী ব্যক্তিকে ৩.২৫ কোটি টাকা দিয়েছিলেন। এ ছাড়াও টাকার বিনিময়ে কয়েকশো চাকরিপ্রার্থীকে ২০১৪ সালে টেট পাস করিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেছেন তিনি।
যে ৩২৫ জন প্রার্থীকে অবৈধ উপায়ে টেট-উত্তীর্ণ করা হয়েছিল, তাঁদের নামের তালিকা গত ২ নভেম্বর ইডির হাতে তুলে দেন তাপস। পরবর্তী কালে তাঁদের মধ্যে দশ জন প্রাথমিক শিক্ষক পদে চাকরি পান। যদিও হাই কোর্টে এ নিয়ে মামলা শুরু হলে ওই দশ জনের চাকরি যায় বলে ইডির কাছে দাবি করেছেন তাপস। এই বিষয়টি ইডির চার্জশিটের ৬৯ পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও ইডি নিয়োগ সংক্রান্ত আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে জানতে পেরেছে, এই ৩২৫ জনের মধ্যে অন্তত ৫ জন প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগপত্র পেয়েছেন এবং এই বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করছেন তদন্তকারীরা।
তাপস ইডির কাছে এ-ও দাবি করেন যে, প্রাথমিকে শিক্ষক পদে ‘অ্যাপয়েন্টমেন্ট’ পাওয়ার জন্য ৫৭ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন ওই ‘ঘোষ’বাবুকে। ঘোষবাবুর মাধ্যমেই টাকার বিনিময়ে ২০১৪ সালে কিছু টেট-অনুত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীকেও পাশ করিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তাপস। চাকরি পাইয়ে দেওয়া হবে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েও টাকা নেওয়া হয়।
ইডি প্রাথমিক ভাবে মানিকের ৬১টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং মিউচুয়াল ফান্ডে ৭.৯৩ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে। এখনও পর্যন্ত নিয়োগ দুর্নীতির এই মামলায় হদিশ পাওয়া এবং বাজেয়াপ্ত করা টাকার পরিমাণ ১১১ কোটি টাকা।