US India Relation

আমেরিকার ‘সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ’ চিন! বাইডেনের ভারত-নীতির অনেকাংশে প্রতিফলন ট্রাম্প-জমানায়

আগামী দিনে আমেরিকার জন্য একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু রাষ্ট্র’ হিসাবে ভারতকে দেখতে চান ট্রাম্প প্রশাসনের হবু জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। কিছু ক্ষেত্রে বাইডেন জমানার প্রতিফলন দেখা যাওয়ারও আভাস দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:৩০
Share:
(বাঁ দিকে) জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ভারত এবং চিনের প্রসঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলেও অনেক ক্ষেত্রেই বর্তমান নীতির প্রতিফলন দেখা যেতে পারে আমেরিকায়। সেই আভাস দিয়ে রেখেছেন আমেরিকার হবু জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ়। ভবিষ্যতে আমেরিকার জন্য ভারত একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু রাষ্ট্র হতে চলেছে বলে মনে করছেন তিনি।

Advertisement

আগামী ২০ জানুয়ারি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেবেন ট্রাম্প। নতুন প্রশাসনে আমেরিকার নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে ওয়াল্টজ়কে বেছে নিয়েছেন হবু প্রেসিডেন্ট। চিনের সঙ্গে আমেরিকার কূটনৈতিক সম্পর্কে দীর্ঘ দিন ধরেই টানাপড়েন রয়েছে। বাইডেনের জমানাতেও তা দেখা গিয়েছে। তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে আমেরিকা-চিনের সংঘাত ট্রাম্পের আমলে নতুন মাত্রা পেতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন। এই আবহে ট্রাম্প প্রশাসনের বিদেশনীতিতে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে সমীকরণ কেমন থাকবে, তা নিয়ে বিস্তর আলোচনাও হয়েছে। বিশেষ করে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক কোন দিকে এগোবে, সে দিকে নজর রয়েছে সকলের।

এই আবহে চিনকে আমেরিকার ‘সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ’ বলে ব্যাখ্যা করলেন ওয়াল্টজ়। একই সঙ্গে ভারতকেও আগামী দিনে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ বন্ধু’ হিসাবে পেতে চান ট্রাম্পের হবু নিরাপত্তা উপদেষ্টা। আমেরিকার ইনস্টিটিউট অফ পিস (ইউএসআইপি)-তে এক আলোচনাসভায় বক্তৃতা করছিলেন ওয়াল্টজ়। মঞ্চে ছিলেন আমেরিকার বর্তমান নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভানও। কিছু দিন আগেই ভারত সফর করে গিয়েছেন সালিভান। ওয়াল্টজ়ের সঙ্গে সহমত তিনিও।

Advertisement

আলোচনাসভায় ওয়াল্টজ় বলেন, “হবু প্রেসিডেন্ট বিশ্বাস করেন যে আমরা চিনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সংঘাত এড়িয়ে চলতে পারি। কারণ, আমাদের বাজার প্রয়োজন রয়েছে তাদের (চিনের)। এটিকে আমরা এমন ভাবে ব্যবহার করব যা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়। যেমন এখন রয়েছে।” তাঁর কথায় সহমত হয়ে সালিভান বলেন, “চিন প্রসঙ্গে একটি ভাল নীতি গ্রহণ করতে গেলে, গোটা এশিয়ার জন্যই একটি ভাল নীতি গ্রহণ করতে হবে। আমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে যে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, সেগুলি নিয়ে আরও কাজ করতে হবে।”

বস্তুত, গোটা নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্প একাধিক বার খোঁচা দিয়েছেন চিনকে। ট্রাম্প শিবির বার বার দাবি করেছে, দীর্ঘ দিন ধরে আমেরিকাকে ‘পুঁজি করে’ বেজিং নিজেদের ভাঁড়ার ভর্তি করেছে। তাদের বক্তব্য, আমেরিকায় উৎপাদন শিল্প ক্রমশ সঙ্কুচিত হয়েছে, তখন এই ক্ষেত্রে নিজেদের সমৃদ্ধ করে গিয়েছে চিন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে শপথ নেওয়ার পরের দিন, অর্থাৎ ২১ জানুয়ারি ওয়াশিংটনে কোয়াড-ভুক্ত রাষ্ট্রগুলির বিদেশমন্ত্রীদের একটি বৈঠক করার জন্য প্রয়াস শুরু করেছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া। ভারতের পক্ষ থেকেও এই সক্রিয়তায় সায় রয়েছে। শপথগ্রহণে যোগ দিতে সেখানে উপস্থিত থাকবেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর, অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী পেনি ওয়াং এবং জাপানের বিদেশমন্ত্রী তাকেশি আইওয়া। থাকবেন আমেরিকার নতুন বিদেশসচিব মার্কো রুবিয়ো-ও। তবে এই বৈঠকটিকে সরকারি সিলমোহর হয়তো দেওয়া যাবে না, কারণ আমেরিকার সেনেটের পক্ষ থেকে তাঁর নতুন পদাভিষেকের আনুষ্ঠানিক সিলমোহর পেতে আরও কয়েক দিন সময় লাগবে। ভারতের পক্ষ থেকে সরকারি ভাবে কোয়াড বৈঠক নিয়ে কিছু বলা হয়নি ঠিকই, তবে জয়শঙ্করের আমেরিকা সফর নিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রাম্পের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিদেশমন্ত্রী সেখানে অন্য যে নেতারা আসবেন, তাঁদের কারও কারও সঙ্গে দেখাও করবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement