বন্ধুর জন্মদিনের অনুষ্ঠান থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন এক দম্পতি। হেঁটেই ফিরছিলেন তাঁরা। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে দম্পতির পথ আটকায় পুলিশ। অভিযোগ, তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হয়, রাত ১১টার পর রাস্তায় কেন ঘোরাঘুরি করছেন? এটা অপরাধ। অতএব, ‘আইন-বিরুদ্ধ’ কাজ করায় জরিমানা দিতে হবে। ভয়ানক সেই অভিজ্ঞতার কথা সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নিয়েছেন বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা কার্তিক পত্রী।
তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত তখন সাড়ে ১২টা। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই এই ঘটনা ঘটে। কার্তিকের অভিযোগ, পুলিশের একটি টহলদারি ভ্যান তাঁদের পথ আটকে দাঁড়ায়। পুলিশের উর্দিতে দুই ব্যক্তি গাড়ি থেকে নেমে পরিচয়পত্র দেখাতে বলেন তাঁদের। কার্তিকের কথায়, “হঠাৎ করে পরিচয়পত্র চাওয়ায় অবাকই হয়েছিলাম। প্রাপ্তবয়স্ক এক দম্পতি একটি স্বাভাবিক দিনে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে, আর তাঁদের কাছে কেন পরিচয়পত্র চাওয়া হচ্ছে, কারণটি বুঝিনি।”
কার্তিক জানিয়েছেন, ওই পুলিশকর্মীদের দাবি মতো মোবাইল ফোনে আধার কার্ডের ছবি দেখান তাঁরা। অভিযোগ, সেই ফোন কেড়ে নেওয়া হয়। এর পরই তাঁদের মধ্যে এক জন চালানের বই বার করে আমাদের নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাসা করতে শুরু করেন। কার্তিক জানতে চান, কেন এ সব চাওয়া হচ্ছে? অভিযোগ, তখন এক পুলিশকর্মী তাঁদের ধমকের সুরে বলেন, “রাত ১১টার পর রাস্তায় ঘোরার কোনও অনুমতি নেই।” কার্তিক বলেন, “এমন কোনও আইন আমি শুনিনি। যদিও পুলিশের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তর্কে যেতে চাইনি।” বরং এই ধরনের নিয়ম সম্পর্কে অবহিত না থাকার জন্য পুলিশকর্মীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন দম্পতি। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি বলে জানান কার্তিক। অভিযোগ, এর পরই তাঁদের ৩০০০ টাকা জরিমানা দিতে বলা হয়।
কার্তিকের দাবি, তাঁরা রীতিমতো পুলিশকর্মীদের কাছে কাকুতিমিনতি করতে থাকেন। এত টাকা দিতে পারবেন না বলেও জানান। কিন্তু পুলিশকর্মীরা তাঁদের গ্রেফতারের ভয় দেখান বলে অভিযোগ। এই নিয়ে যখন টানাপড়েন চলছিল, তখন পুলিশকর্মীদের এক জন কার্তিককে ডেকে নিয়ে যান। তার পর বলেন, “১০০০ টাকা দিলেই, বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হবে।” দম্পতির অভিযোগ, পেটিএমের মাধ্যমে তাঁদের ১০০০ টাকা দেন। তার পর তাঁদের ছেড়ে দেন পুলিশকর্মীরা।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন ওই দম্পতি। বেঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনারকে বিষয়টি দেখার জন্য জন্য অনুরোধ করেন। এই ঘটনায় এক জন কনস্টেবল এবং এক হেড কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।