অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে হেরে মুখ ঢাকলেন ড্যানিল মেদভেদেভ। ছবি: রয়টার্স।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে অঘটন। দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেই বিদায় পঞ্চম বাছাই ড্যানিল মেদভেদেভের। হেরে গেলেন আমেরিকার ১৯ বছর বয়সি লার্নার তিয়েনের বিরুদ্ধে। পাঁচ সেটের লড়াই শেষে হার মানলেন মেদভেদেভ। ম্যাচের ফল লার্নারের পক্ষে ৬-৩, ৭-৬ (৭-৪), ৬-৭ (৮-১০), ১-৬, ৭-৬ (১০-৭)।
লার্নার শব্দের অর্থ— যিনি শিখছেন। তিয়েনের মা অঙ্কের শিক্ষিকা। সেই কারণে তিনি ছেলের নাম রাখেন লার্নার। তিয়েনের বাবা আইনজীবী। তিনি তাই মেয়ের নাম রেখেছেন জাস্টিস। ১৯ বছরের লার্নার যদিও বৃহস্পতিবার মেলবোর্নে গভীর রাতে শিক্ষা দিলেন মেদভেদেভকে। ধৈর্যের শিক্ষা দিলেন তরুণ টেনিস খেলোয়াড়। মেলবোর্নের সময় অনুযায়ী রাত তিনটে নাগাদ খেলা শেষ হয়। চার ঘণ্টা ৪৯ মিনিট ধরে লড়াই করার পর মেদভেদেভকে হারিয়ে তৃতীয় রাউন্ডে উঠলেন তিয়েন।
গত বারের ফাইনালিস্ট মেদভেদেভ এ বারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের প্রথম রাউন্ডে কষ্ট করে জিতেছিলেন। মেজাজ হারিয়ে ক্যামেরা ভেঙেছিলেন। দ্বিতীয় রাউন্ডে ম্যাচ আবার পাঁচ সেটে গড়ায়, কিন্তু এ বার আর জেতা হল না রুশ টেনিস তারকার। ক্রমতালিকায় ১২১ নম্বর তিয়েনের বিরুদ্ধে হেরে গেলেন বিশ্বের পাঁচ নম্বর।
তৃতীয় রাউন্ডে উঠলেন লার্নার তিয়েন। ছবি: রয়টার্স।
প্রথম রাউন্ডে তাইল্যান্ডের কাসিদিত সামরেজের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলেন মেদভেদেভ। প্রথম সেট জিতলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেট হেরে গিয়েছিলেন রাশিয়ার তারকা। তৃতীয় সেটের শেষ গেমে একটি ভলি মারতে গিয়ে ভুল করেছিলেন মেদভেদেভ। বলে র্যাকেট ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। তার পরেই মেজাজ হারিয়েছিলেন মেদভেদেভ। নেটের মাঝে একটি ক্যামেরা লাগানো থাকে। সেই ক্যামেরায় বেশ কয়েক বার র্যাকেটে দিয়ে মেরেছিলেন। সেই আঘাতে ক্যামেরা ভেঙে যায়। র্যাকেটও ভেঙে যায়।
বৃহস্পতিবারও মেজাজ হারান মেদভেদেভ। মাটিতে র্যাকেট মারেন। তবে প্রথম দু’টি সেটে হেরে যাওয়ার পর ম্যাচে ফিরেছিলেন তিনি। তৃতীয় সেট লড়াই করে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন। চতুর্থ সেটে বিপক্ষকে দাঁড়াতে দেননি। কিন্তু পঞ্চম সেটে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে হার মানতে বাধ্য হন মেদভেদেভ।
মেদভেদেভের বিরুদ্ধে জিতে তিয়ান বলেন, “আমি চাইছিলাম ম্যাচটা যাতে পঞ্চম সেটে টাইব্রেকারে না যায়। তবে জিততে পেরে ভাল লাগছে। প্রথম দুটো সেট জেতার পর তৃতীয় সেটটা হারা উচিত হয়নি। ম্যাচ পয়েন্ট পাওয়ার সুযোগ হারিয়ে খারাপ লেগেছিল। তৃতীয় সেটে হারের ধাক্কা সামলাতে সময় লেগেছিল। চতুর্থ সেটে আমি হতাশ হতে গিয়েছিলাম। সত্যি বলতে চতুর্থ সেটের সময় আমার শৌচালয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হয়েছিল। আমি চাইছিলাম সেটটা তাড়াতাড়ি শেষ করতে।”
১৯ বছরের তিয়েন হয়তো চতুর্থ সেটে দম নিচ্ছিলেন। সেই কারণে মেদভেদেভকে ওই সেটটি ছেড়ে দেন তিনি। সে ভাবে লড়াই করেননি। পঞ্চম সেটের শুরুতেই সেটা বোঝা গেল। মরিয়া লড়াই শুরু করেন। মেদভেদেভকে দৌড় করাচ্ছিলেন বার বার। পঞ্চম সেটে বোঝা যাচ্ছিল তিনি হাঁপিয়ে গিয়েছেন। বিধ্বস্ত লাগছিল তাঁকে। চার ঘণ্টার উপর লড়াই করার পর সেটা স্বাভাবিক। তা-ও আবার পর পর পাঁচ সেটের ম্যাচ খেলার ধকল। তাই শেষ পর্যন্ত লড়েও হার মানেন মেদভেদেভ।
অন্য ম্যাচে, অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের তৃতীয় রাউন্ডে পৌঁছে গিয়েছেন শীর্ষ বাছাই ইয়ানিক সিনার। তিনি ট্রিস্টান স্কুলটেকের বিরুদ্ধে প্রথম সেটে হারলেও পরের তিনটি সেট জিতে নেন। ৪-৬, ৬-৪, ৬-১, ৬-৩ গেমে ম্যাচ জিতে নেন সিনার।