হিমাচলের নয়া মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুকে শপথবাক্য পাঠ করাচ্ছেন রাজ্যপাল আর ভি আরলেকার। ছবি টুইটার।
মেলালেন, তিনি মেলালেন। রাজ্যে তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর আসন একেবারেই নিষ্কণ্টক ছিল না। সেই সুখবিন্দর সিংহ সুখু যখন শনিবার দুপুরে হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন, তখন দর্শকাসনে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গান্ধী, প্রিয়ঙ্কা গান্ধী, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য রাজনীতিতে সুখুর প্রতিদ্বন্দ্বী বলে পরিচিত হিমাচল প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি প্রতিভা সিংহও।
শনিবার দুপুর দেড়টা নাগাদ রাজভবনে হিমাচলের ১৫তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সুখু। তাঁর সঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মুকেশ অগ্নিহোত্রীও। বহু বছর পর বীরভদ্র সিংহ এবং তাঁর পরিবারের বাইরে কেউ হিমাচলে কংগ্রেসের টিকিটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী হলেন। গুজরাটে শোচনীয় ব্যর্থতার পর হিমাচলের জয় কংগ্রেসের মুখরক্ষা করেছিল। কিন্তু দলের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী পদের একাধিক দাবিদার তৈরি হওয়ায় অস্বস্তিতে পড়তে হয় কংগ্রেসকে। বীরভদ্রের স্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভানেত্রী প্রতিভা প্রয়াত স্বামীর স্মৃতি উস্কে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে তাঁকে বা তাঁর বিধায়কপুত্র বিক্রমাদিত্যকে বসানোর দাবি জানান। কিন্তু কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের তরফে সুখুর নামেই সিলমোহর দেওয়া হয়।
একদা দলের ভিতরে বীরভদ্র-বিরোধী বলে পরিচিত সুখুকে মুখ্যমন্ত্রী করায় কংগ্রেসের অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন যে, প্রতিভা এবং তাঁর অনুগামীরা সুখুকে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মেনে নেবেন না। বরং আর একপ্রস্ত জলঘোলা হবে সে রাজ্যের রাজনীতিতে। সে সব জল্পনা উড়িয়ে প্রতিভা সকালেই জানিয়েছিলেন, তাঁর দলের কেউ মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন, তাই দলের প্রধান হিসাবে তিনি অবশ্যই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে যাবেন। ঐক্যের বার্তা দেওয়া সুখুও সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘‘উনি (প্রতিভা) রাজ্যে দলের প্রধান। তাঁর নির্দেশেই আমরা সবাই কাজ করব।”
শপথগ্রহণে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা আনন্দ শর্মাও। হিমাচলের এই নেতা অধুনা নিষ্ক্রিয় কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর সদস্য। সেই আনন্দের মুখেও দল এবং সুখুর প্রশংসা শোনা গিয়েছে শনিবার। সুখুকে যে ভাবে পরিষদীয় দলের বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে, তার তারিফ করে তিনি বলেছেন, এমন গণতান্ত্রিক পদ্ধতি কংগ্রেসই অনুসরণ করে থাকে। অন্তর্দ্বন্দ্বে দীর্ণ কংগ্রেস হিমাচলের জয় এবং ঐক্যের এই ছবি প্রকাশ্যে এনেই দলের কর্মী সমর্থকদের উজ্জীবিত হওয়ার বার্তা দিতে চাইছে।