Bankura Goods Train Accident

ঘুমিয়ে পড়েছিলেন মালগাড়ির চালক, সিগন্যাল দেখতে না পাওয়ায় দুর্ঘটনা, জানালেন ডিআরএম

বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেশনের কাছে রবিবার ভোরে দু’টি মালগাড়ির সংঘর্ষ হয়। একটির ইঞ্জিন উঠে পড়ে অন্যটির উপর। এই দুর্ঘটনার জন্য চালকের গাফিলতিকেই দায়ী করলেন ডিআরএম।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৩ ০৯:১৮
Share:

বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত মালগাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

রবিবার ভোরে বাঁকুড়ার ওন্দা স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে দু’টি মালগাড়ি। লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িকে পিছন দিক থেকে এসে সজোরে ধাক্কা মেরেছে অন্য একটি মালগাড়ি। ঘটনাস্থলে গিয়ে এই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করলেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার (ডিআরএম) মণীশ কুমার। তিনি জানিয়েছেন, সম্ভবত মালগাড়ির চালক ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তাই সিগন্যাল দেখতে পাননি তিনি।

Advertisement

ওন্দা স্টেশনের লুপ লাইনে বিষ্ণুপুরের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ছিল একটি মালগাড়ি। বাঁকুড়া থেকে বিষ্ণুপুরের দিকে যাওয়া অন্য একটি মালগাড়ি সেই লাইনে ঢুকে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে ধাক্কা মারে। গতি বেশি থাকায় মালগাড়িটির ইঞ্জিন অপরটির উপরে উঠে পড়ে। দুমড়ে-মুচড়ে যায় একাধিক বগি। দুই মালগাড়ির মোট ১৩টি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়েছে এই দুর্ঘটনার ফলে।

এ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের ডিআরএম বলেছেন, ‘‘চালকের ভুলের কারণেই এই দুর্ঘটনা। মনে হচ্ছে, ওঁর চোখ লেগে এসেছিল। ভোর ৪টের সময় মাঝেমাঝে ঘুম এসে যায়। তাই চালক সিগন্যাল দেখতে পাননি। সিগন্যাল লাল ছিল। পয়েন্ট লুপ লাইনের দিকে সেট করা ছিল। সেখানে অন্য মালগাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। পিছন থেকে সেই মালগাড়িটিতে ধাক্কা মারেন চালক।’’

Advertisement

তবে এই ঘটনায় কেউ তেমন আহত হননি বলে জানিয়েছেন ডিআরএম। দুর্ঘটনার জেরে ছিঁড়ে গিয়েছে ওভারহেড তার। ফলে আদ্রা-খড়্গপুর শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। দ্রুত পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশ্বাস ডিআরএমের। তিনি জানিয়েছেন, কিছু ক্ষণের মধ্যেই আপ লাইনে ট্রেন চলবে। ডাউন লাইনেও ট্রেন চলাচল ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে স্বাভাবিক করে ফেলা যাবে।

দুই মালগাড়ির সংঘর্ষের প্রচণ্ড শব্দে রবিবার ভোরবেলা ঘুম ভাঙে স্থানীয়দের। দুর্ঘটনাস্থলে ভিড় জমে যায়। স্থানীয়েরাই এগিয়ে এসে চলন্ত মালগাড়ির ভিতরে আটকে পড়া লোকো পাইলটদের উদ্ধার করেন।

বাঁকুড়ার দুর্ঘটনায় কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। সেই তালিকায় আছে, পুরুলিয়া-হাওড়া, আসানসোল-দিঘা, আদ্রা-খড়্গপুর প্যাসেঞ্জার, বিষ্ণুপুর-আদ্রা প্যাসেঞ্জার, বিষ্ণুপুর-ধানবাদ, খড়্গপুর-আসানসোল, সাঁতরাগাছি-পুরুলিয়া এক্সপ্রেস, খড়্গপুর-হাতিয়া এক্সপ্রেস, গোমো-খড়্গপুর, আদ্রা-আসানসোল, আসানসোল-টাটা মেমু। এ ছাড়া, আনন্দবিহার টার্মিনাল-পুরী এক্সপ্রেস আদ্রা-টাটা-হাতিয়া লাইনে এবং পোরবন্দর-সাঁতরাগাছি এক্সপ্রেস পুরুলিয়া-টাটা-খড়্গপুর লাইনে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রেল।

কয়েক সপ্তাহ আগে ওড়িশার বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনার স্মৃতি ফিরিয়ে দিয়েছে এই ঘটনা। গত ২ জুন হাওড়ার শালিমার থেকে চেন্নাইয়ের দিকে যাওয়া করমণ্ডল এক্সপ্রেস বালেশ্বরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়। ওই সময় একসঙ্গে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়িও। করমণ্ডল এক্সপ্রেস লুপ লাইনে ঢুকে পড়েছিল। সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে প্রচণ্ড গতিতে আসা ট্রেনটিকে সজোরে ধাক্কা মারে। করমণ্ডলের ইঞ্জিন উঠে যায় মালগাড়ির উপরে। উল্টো দিক থেকে আসা বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের কয়েকটি বগিও লাইনচ্যুত হয়। এই দুর্ঘটনায় ২৯১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা হাজারেরও বেশি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement