ফাইল চিত্র।
পশ্চিম বর্ধমান জেলায় একটি রফতানি কেন্দ্র গড়ে তুলতে চায় কেন্দ্রীয় সরকার। এমনটা জানিয়ে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা আসানসোলের বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ের অভিযোগ, এ বিষয়ে জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজিকে চিঠি লেখা হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও আগ্রহ প্রকাশ করেনি জেলা প্রশাসন। তবে জেলাশাসকের দাবি, ‘‘এ নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়।’’
বাবুল জানান, দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে রফতানি কেন্দ্র গড়ে তুলবে কেন্দ্রীয় সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রকের অধীনে ডিরেক্টর জেনারেল অব ফরেন ট্রেড এই পরিকল্পনা রূপায়ণের দায়িত্বে থাকছে। পশ্চিম বর্ধমানেও রফতানি কেন্দ্র তৈরি হবে। তবে তার আগে জেলায় গঠন করতে হবে রফতানি উন্নয়ন কমিটি। কমিটির চেয়ারম্যান হবেন জেলাশাসক। কমিটিতে থাকবেন, কৃষি, উদ্যানপালন, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য, তাঁত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞেরা।
বাবুলের অভিযোগ, ‘‘গত ৩১ অগস্ট জেলাশাসককে চিঠি লিখে দ্রুত এই রফতানি উন্নয়ন কমিটি গঠন করার জন্য বলা হলেও জেলা প্রশাসন কোনও আগ্রহ দেখায়নি। জেলার শিল্প সম্ভাবনা ও শিল্পোদ্যোগীদের কথা ভেবেই কেন্দ্রটি দ্রুত তৈরি করা উচিত।’’ মন্ত্রীর চিঠি পেয়েছেন জানিয়ে জেলাশাসক অবশ্য দাবি করেন, ‘‘রফতানি কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনাটি অনেক বড় বিষয়। জেলা স্তরে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। রাজ্য সরকারের সচিব পর্যায়ের আধিকারিকেরা সিদ্ধান্ত নেবেন।’’
তবে বিষয়টি সামনে আসার পরে, জেলায় রফতানি কেন্দ্র দ্রুত তৈরি করা হোক, এমনটাই চাইছেন শিল্পোদ্যোগীরা। বিভিন্ন বণিক সংগঠনের মতে, জেলায় কয়েক হাজার এমএসএমই অধীনস্থ শিল্প সংস্থা আছে। ওই শিল্পদ্যোগীরা রফতানি কেন্দ্রের মাধ্যমে তাঁদের উৎপাদিত পণ্য দেশের নানা প্রান্তে, এমনকি, বিদেশেও অনেক সহজে রফতানি করতে পারবেন। ‘ফেডারেশন অব সাউথ বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়’-এর কার্যকরী সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতান বলেন, ‘‘এমএসএমই শিল্প ক্ষেত্রের উন্নতির ক্ষেত্রে রফতানি কেন্দ্র সহায়ক হলে, আপত্তি থাকার কথা নয়।’’ আসানসোলের বিশিষ্ট শিল্পোদ্যোগী তথা এক্সপোর্ট লাইসেন্সপ্রাপ্ত পবন গুটগুটিয়া বলেন, ‘‘রফতানি কেন্দ্রের মাধ্যমে আমাদের এখানের শিল্পোদ্যোগীরা দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বাজারের পণ্যের চাহিদা জেনে রফতানি করতে পারবেন। শিল্পাঞ্চলে প্রচুর সংখ্যায় সিমেন্ট, ফ্লাইঅ্যাশ ব্রিকস, ইস্পাত ও কয়লা অনুসারী শিল্প আছে। রয়েছেন স্বয়ম্ভর গোষ্ঠী, মৎস্য, উদ্যানপালন ও হস্তশিল্পের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই। এ ধরনের কেন্দ্র থেকে সবাই উপকৃত হবেন।’’ জেলায় এ ধরনের কেন্দ্র যাতে তৈরি হয়, সে জন্য জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে দাবি জানানোর কথাও বলেছেন পবনবাবুরা।