ফাইল চিত্র।
আদালতে মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সৎকার করা যাবে না। মামলাকারীর এই আবেদনের জেরে এক বছর ধরে সৎকার স্থগিত রয়েছে এক বৃদ্ধার। মর্গে থাকা দেহের ময়নাতদন্ত করে অবিলম্বে তা সৎকারের নির্দেশ দিল আদালত। আত্মীয়েরা না করলে রাজ্যকে সৎকার করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ।
পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার বাসিন্দা রমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃত্যু হয়েছে বছরখানেক আগে। তার পর প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও তাঁর দেহ সৎকার হয়নি। কারণ, মায়া মজুমদার নামে বৃদ্ধার এক নিকট আত্মীয়া কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করে দাবি করেন, রমার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী তিনি। কিন্তু তাঁর বদলে সম্পত্তি পেয়েছেন নুর হক মল্লিক নামে এক ব্যক্তি। মায়ার অভিযোগ, মিথ্যা উপায়ে ওই সম্পত্তি নিয়েছেন নুর। কী ভাবে বৃদ্ধার মৃত্যু হল তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন মায়া। আদালতের কাছে সিবিআই তদন্তেরও দাবি করেন। এই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সৎকার স্থগিতেরও আবেদন জানান তিনি।
মঙ্গলবার মামলার শুনানিতে বিচারপতিরা এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছেন। তাঁদের যুক্তি, ২০২১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি নুর হক নামে ওই ব্যক্তি বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। দু’দিন পর ওই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়। হাসপাতালে ভর্তি এবং মৃত্যুর খবর মায়াকে এসএমএস করে জানিয়েছিলেন নুর। তা সত্ত্বেও এক দিনও হাসপাতালে আসেননি মায়া। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে রমার।
এই মামলায় রাজ্য আদালতে জানায়, প্রায় ন’বছর ধরে রমার দেখভাল করছিলেন নুর ও তাঁর পরিবার। তাঁকেই নিজের সব সম্পত্তি দিয়ে দেওয়ার কথা জানান রমা। কিন্তু পরে বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। আদালতেই নুরকে সম্পত্তি দেওয়ার কথা জানান তিনি।
মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কাটোয়া মেডিক্যাল কলেজে এখনও মৃতার দেহ রাখা আছে। সেই দেহের সম্ভব হলে ময়নাতদন্ত করা হবে। মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের নিয়ে একটি দল বানাতে হবে। তাঁরাই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। আদালতের নির্দেশ, কেউ এগিয়ে না এলে রাজ্য সরকারকেই দেহ সৎকার করতে হবে।