BSF

BSF: বিএসএফ না চাইলে সীমান্তে পাচার সম্ভব নয়! সিতাইয়ে গুলির নিন্দায় সরব উদয়ন

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিতাইয়ের চামটা এলাকায় বিএসএফ-এর গুলিতে তিন সন্দেহভাজন পাচারকারীর মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে এক জন ভারতীয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০২১ ১৪:২৪
Share:

ফাইল চিত্র

সীমান্তে পাচারের রমরমার দায় বিএসএফ-এর ঘাড়ে চাপালেন তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ। এক দিকে শুক্রবার যখন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভল্লা রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও স্বরাষ্ট্র সচিব ভগবতীপ্রসাদ গোপালিকার সঙ্গে বৈঠকে বসছেন, ঠিক সেই সময়েই সীমান্তে গুলি চালনার ঘটনার দায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর উপরেই চাপালেন উদয়ন। বললেন, ‘‘মাথায় গুলি লেগে প্রকাশ বর্মণের মৃত্যু কেন হল? বিএসএফ-এর মদত ছাড়া সীমান্তে কোনও কিছুই পাচার করা সম্ভব নয়। আমি সীমান্তবর্তী এলাকার বিধায়ক। অধিকাংশ কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা। সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষের সমস্যার কথা আমি জানি। স্টিলের ব্লেড দিয়ে মোড়া কাটাতাঁরের বেড়া পেরিয়ে কী করে পাচার হয়? তা নিয়ে সকলের মনেই প্রশ্ন আছে।’’

Advertisement

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে সিতাইয়ের চামটা এলাকায় বিএসএফ-এর গুলিতে তিন সন্দেহভাজন পাচারকারীর মৃত্যু হয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, মৃত তিনজনের মধ্যে এক জন ভারতীয়, বাকি দু’জন বাংলাদেশের নাগরিক। মৃত ভারতীয়ের নাম প্রকাশ বর্মণ। সেই নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করেন দিনহাটার নবনির্বাচিত বিধায়ক। বলেন, ‘‘বিএসএফ মাঝে মধ্যে দু’একজনকে গ্রেফতার করে, গুলি চালায়, কিন্তু পাচার সব সময় চলতে থাকে। মাঝে মাঝে যখন পাচারকারীদের সঙ্গে টাকা পয়সার ভাগে সমস্যা হয়, তখন বিএসএফ গুলি চালায়। এলাকার মানুষদের উপর জুলুম চলতে থাকে। মনে রাখতে হবে, কাউকে হত্যা করার অধিকার বিএসএফ-এর নেই। গুলি করে আটকাতে পারতেন সীমান্তরক্ষীর বাহিনীর সদস্যরা। তা করা হল না। বিএসএফ-এর দিকে কেউ পাথর ছুড়েছে, এ কথা কেউ বিশ্বাস করবে না। এ সব অজুহাত দেওয়া হচ্ছে। আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি এই কাজে। বিএসএফ-এর উপর অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রণ করুক। না হলে অশান্তি বাড়বে।’’

ভারত, পঞ্জাব ও অসম সীমান্তে বিএসএফ-এর এক্তিয়ারভুক্ত এলাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে কেন্দ্র। শুক্রবার অজয় ভল্লার উপস্থিতিতে এই নিয়ে আলোচনা হতেও পারেও বলে খবর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই নির্দেশ ঘোষণার পর থেকে বিরোধিতা শুরু করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে তিনি এই নির্দেশ প্রত্যাহারের দাবিও জানিয়েছেন। রাজ্য পুলিশের ক্ষমতা খর্ব হবে বলে সেই চিঠিতে জানিয়েছিলেন তিনি। উদয়ন সাংবাদিক বৈঠকে এ দিন বলেন, ‘‘আমরা প্রথম থেকে বলে এসেছি, কাঁটাতারের বেড়া একেবারে জিরো পয়েন্টে দেওয়া হোক। সেখানে গেট না থাকলেও অসুবিধা নেই। তা হচ্ছে না, ভারতের ভূখণ্ডের ১৫০ গজ ভিতরে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হচ্ছে। ভারত নিজের জমি ছেড়ে দিচ্ছে। যত অত্যাচার, জুলুম, ভারতের কাঁটাতার এলাকার ভিতরে ভারতীয়দের উপর করা হয়। এত দিন ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বিএসএফের এলাকা ছিল। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় এই এলাকায় বিএসএফ হস্তক্ষেপ করতে পারত। এখন নতুন আইন বলবৎ করার চেষ্টা হচ্ছে পঞ্জাব, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমে ৫০ কিলোমিটার বিএসএফ-এর আওতায় আনার চেষ্টা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিবাদ করেছেন। আমরাও প্রতিবাদ করছি। কারণ, ৫০ কিলোমিটার হলে অনেকদূর পর্যন্ত এলাকা বিএসএফের এক্তিয়ারের মধ্যে চলে আসবে। আমরা যাঁরা সীমান্ত এলাকায় থাকি, তাঁরা জানি, কী ভাবে বিএসএফ-এর এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় জুলুম চালায় বাহিনী। আমাদেরও গাড়ি আটকে রেখে বারবার নাজেহাল করা হয়। এ বার সাধারণ মানুষও অত্যাচারের মুখে পড়বে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement