—ফাইল চিত্র।
শৈলশহর দার্জিলিঙে এ বার যানজট কমাতে অনেকটা সিকিমের অনুকরণে ট্র্যাফিক ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে পুলিশ। ছাঙ্গু, নাথু লা এবং বাবামন্দিরের মতো টাইগার হিলে যেতেও আগের দিন অনুমতিপত্রের কুপন নিতে হবে। সেই কুপন মিলবে দার্জিলিঙের সদর ট্র্যাফিক পুলিশের দফতর থেকে।
শৈলশহরের ট্র্যাফিক ব্যবস্থা নিয়ে গত এক মাস ধরে পরিবহণ ও পর্যটন ব্যবসায়ী, গাড়ির মালিক, হোটেল ব্যবসায়ী, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছে দার্জিলিং জেলা পুলিশ। তার পরে সম্প্রতি নতুন কয়েকটি ট্র্যাফিক নিয়মের কথা ঘোষণা করেছে তারা। সেখানে টাইগার হিল থেকে বাতাসিয়া লুপ, চিড়িয়াখানা, এইচএমআই-এ পার্কিং ও গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি রয়েছে। ঠিক হয়েছে, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন নিয়ম কার্যকর করা হবে।
সিকিমের নাথু লা-সহ কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্রে যেতে হলে অনুমতি নিতে হয় পর্যটকদের। অনেকটা সেই ধাঁচেই টাইগার হিলের জন্য এ বার থেকে কুপন দেবে দার্জিলিং পুলিশ। আগের দিন চকবাজারের সদর ট্র্যাফিক দফতর থেকে এই কুপন দেওয়া হবে। টাইগার হিলে সূর্যোদয় দেখতে শেষ রাতে গাড়ি নিয়ে বার হতে হয়। সেই গাড়িকে আগের দিনই কুপন সংগ্রহ করতে হবে। আপাতত টাইগার হিলের আয়তন, পার্কিং লটের হিসেবে মাথায় রেখে রোজ ৩০০ গাড়িকে কুপন দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছে পুলিশ।
এই সংখ্যা নিয়েই গোল বেঁধেছে। এখানকার পর্যটন, পরিবহণ, হোটেল ব্যবসায়ীদের সংগঠন হিমালয়ান হসপিট্যালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের দাবি, ভরা পর্যটন মরসুমে দিনে হাজার পাঁচেক মানুষ টাইগার হিলে যান। একটি গাড়িতে পাঁচ জন যাত্রী ধরলেও গাড়ির সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে হাজারখানেক। সংগঠনের দাবি, নতুন নিয়মে সমস্যা ও বিশৃঙ্খলা তৈরি হতে পারে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রী ও পর্যটন মন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছে। যানজট সমস্যা কমাতে পর্যটকদের গতিবিধি এ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা হলে বড় সমস্যা হতে পারে।’’ সংস্থার তরফে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবারই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছেন। দার্জিলিং পুলিশের ডিএসপি (টাউন) রাহুল পাণ্ডে অবশ্য বলেন, ‘‘পর্যটনকেন্দ্র থেকে দার্জিলিং শহরের যানজট, পার্কিং সমস্যা মেটাতেই সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়েছে।’’
গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করা হবে অন্যত্রও। যেমন, বাতাসিয়া লুপ সকাল ১০টায় খুলবে এবং সেখানে যাওয়ার জন্য কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকাতেই পার্কিং করা যাবে। চিড়িয়াখানা, এইচএমআই-কে পুরোপুরি ‘নো স্টপিং জ়োন’ করা হয়েছে। পূর্ত দফতরের পার্কিং এলাকা থেকে গাড়ি থেকে হেঁটে ওই এলাকায় যেতে হবে। আপৎকালীন কারণ ছাড়া সকাল ৭টা থেকে রাত ৮টা অবধি কোনও বড় গাড়ি শহরে ঢুকবে না।