অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
বিজেপির বিরুদ্ধে সিপিএমের অবস্থান কী হবে, তা সিপিএমের ওপরেই ছেড়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার সকালে দিল্লির উদ্দেশে রওনা হন তিনি। সংসদের সংক্ষিপ্ত অধিবেশনে যোগদান করতে যাওয়ার আগে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার সমন্বয় কমিটিতে সিপিএমের প্রতিনিধি না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন করা হয় অভিষেককে। সেখানেই সংক্ষিপ্ত জবাব দিয়ে তিনি বিমান ধরতে রওনা দেন।
জবাবে অভিষেক বলেন, ‘‘সিপিএমের কী অবস্থান হবে, তা সিপিএম ঠিক করবে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা প্রত্যেকটি সমমনোভাবাপন্ন দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। সিপিএম বা অন্য কোন রাজনৈতিক দল কী করবে, এটা তাদের বিষয়।’’ উল্লেখ্য, রবিবার রাতে সিপিএমের পলিটব্যুরো একটি বিবৃতি জারি করে। সেই বিবৃতিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, ইন্ডিয়ার সমন্বয় কমিটিতে থাকবেন না সিপিএমের কোনও প্রতিনিধি। সিপিএমের অভ্যন্তরীণ সমীকরণের কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন জাতীয় রাজনীতির কারবারিরা। তাঁদের বক্তব্য, বাংলা এবং কেরল— এই দুই রাজ্যে দলীয় নেতৃত্বের ‘বিড়ম্বনা’র কথা মাথায় রেখে পলিটব্যুরোর সিদ্ধান্ত, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সমন্বয় কমিটিতে এখন সিপিএম প্রতিনিধি পাঠাবে না।
এর পরেই জোটে সিপিএমের ভূমিকা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বল অভিষেক তাদের কোর্টেই ঠেলে দিয়েছেন। কারণ, তৃণমূলের সঙ্গে জোট ইন্ডিয়ার মঞ্চে সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে দেখা যাওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গের নিচুতলার সংগঠনে তার প্রভাব পড়ছে বলেই মনে করছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের একাংশ। তাই নিজেদের বিড়ম্বনার কথা আগেই এ কে গোপালন ভবনকে জানিয়েছে কলকাতার মুজফ্ফর আহমেদ ভবন। পাশাপাশি, কেরলে তাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা কংগ্রেসের সঙ্গে। মনে করা হচ্ছে, এই দু’টি রাজ্যের রাজনৈতিক সমীকরণের কারণেই তারা সমন্বয় কমিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। তাই সিপিএমের সেই কৌশলকে কার্যত প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন কৌশলী অভিষেক, এমনটাই মত বাংলার রাজনীতির কারবারিদের।
অন্য দিকে, সোমবার দিল্লি পৌঁছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের গোটা অধিবেশনেই লোকসভায় থাকার কথা। যোগ দেওয়ার কথা দলের সংসদীয় বৈঠকে এবং সংসদীয় রণকৌশল রচনা নিয়ে আলোচনায়। ইডি ডাকার কারণে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ দিল্লিতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র সমন্বয় কমিটির প্রথম বৈঠকে থাকতে পারেননি। সংসদের অধিবেশন চলাকালীন বিরোধীদের সঙ্গে কক্ষ সমন্বয় করতে দেখা যাবে তাঁকে। শুধু লোকসভা অধিবেশনই নয়, আগামী মাসের গোড়ায় তৃণমূলের কেন্দ্র-বিরোধী কর্মসূচি রয়েছে দিল্লিতে। সেই প্রস্তুতিও এই সময়ে সারবেন তিনি।