COVID-19

অতিমারিতেও  অবাধে মেলা, চড়ক-গাজনের জমায়েতে করোনার ভয়

গত ২৪ ঘন্টায় ঝাড়গ্রামে নতুন করে ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোট আক্রান্ত সরকারি হিসেবে ২০ জন। তবে চিকিৎসকদের মতে, বাস্তবে সংখ্যাটা অনেক বেশি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বেলিয়াবেড়া শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২১ ০৭:৫৫
Share:

প্রতীকী চিত্র।

করোনার আবহে গত বছর ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম ও বেলিয়াবেড়ায় চড়ক উৎসব বন্ধ ছিল। জমায়েতও ছিল না। কিন্তু এ বার ওই দুটি ব্লকেই ধূমধামের সঙ্গে চড়ক উৎসব পালনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। উৎসবকে কেন্দ্র করে এবার কোথাও দু’দিন, কোথাও আবার তিনদিনের চড়ক মেলাও হবে।

Advertisement

বেলিয়াবেড়া ব্লকের ব্যাঘ্রেশ্বর শিবমন্দিরে সোমবার বিকেলে চড়কের সূচনা হয়েছে। মন্দির লাগোয়া ‘ভক্তারা’(ব্রতী) জ্বলন্ত আগুনের উপর হেঁটে চলেছেন। আর দর্শকের হাত তালিতে ফেটে পড়ছে মন্দির প্রাঙ্গণ। করোনার আবহেও এ বার চড়কে ১৮০ জন ভক্তা রয়েছেন। চড়ক উৎসব চলবে তিনদিন ধরে। বেলিয়াবেড়া রাজ পরিবারের সদস্য বিশ্বজিৎ দাস মহাপাত্র বলেন, ‘‘গত বছর নিয়মরক্ষার চড়ক হয়েছিল। কিন্তু এ বার ভালভাবেই চড়ক হচ্ছে। এ বার প্রচুর ভক্তা যোগ দিয়েছেন।’’

সুবর্ণরেখা নদীতীরে বেলিয়াবেড়া ব্লকের চোরচিতা চোরেশ্বর শিবমন্দিরকে কেন্দ্র করে চড়ক হয়। ১৩ জন ভক্তা নদীতে স্নান সেরে ‘অগ্নিপাট’-এ পবিত্র হন (জ্বলন্ত কাঠ কয়লার উপরে হাঁটেন)। তবে এখানে চড়কের মূল আকর্ষণ হল চাটু ফোঁড়, রজনী ফোঁড়, জিভ ফোঁড়। আজ, মঙ্গলবার জিভ ফোঁড় হবে। মন্দিরের পূজারী তারাশঙ্কর বটব্যাল বলেন, ‘‘৪১১ বছরের প্রাচীন এই মন্দির৷ চড়ক উৎসবের জন্য মানুষ সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে। প্রায় দু’হাজার মানুষ জিভ ফোঁড় করবে। মেলা বসেছে।’’ পুরোহিতের দাবি, মঙ্গলবার মেলায় ৫০ হাজার মানুষের জমায়েত হবে। মেলায় মানুষের সংক্রমণ ছড়াবে না? পূজারী বলেন, ‘‘এদিকে করোনা নেই। এই মেলা সম্পূর্ণ আলাদা। তিনদিন ধরে হবে।’’

Advertisement

নয়াগ্রাম ব্লকের রামেশ্বর শিব মন্দিরের গাজন উৎসবটি কয়েকশো শতাব্দী প্রাচীন। জানা গিয়েছে, আনুমানিক ষোড়শ শতকে নয়াগ্রামের সুবর্ণরেখা নদী তীরে রামেশ্বরে এই শিব মন্দিরটি তৈরি হয়েছিল। মন্দিরটি পুরোটাই মাকড়া (ঝামা) পাথরের তৈরি। মন্দিরের গর্ভগৃহে রয়েছে ১২টি শিবলিঙ্গ। আর এই শতাব্দী প্রাচীন চড়ক উৎসবকে ঘিরে বসে তিন দিনের মেলা। এ বছর মোট ১৫ জন ভক্তা রয়েছেন। মঙ্গলবার জিভ ফোঁড় হবে। বুধবার রামেশ্বরে ‘অগ্নিপাট’৷ মন্দিরের পুরোহিত আদিত্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গত বছর প্রশাসনের তরফে নিষেধাজ্ঞা থাকায় গাজন উৎসব বন্ধ ছিল। এ বার সাড়ম্বরে উৎসব হচ্ছে।’’

রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় নতুন করে ৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২০ জন। তবে চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বাস্তবে সংখ্যাটা অনেক বেশি। করোনা হাসপাতালে ১২ জন ভর্তি রয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে গাজন উৎসবকে কেন্দ্র করে সংক্রমণের আশঙ্কায় রয়েছেন চিকিৎসকদের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement