ফাইল চিত্র।
কোনও অবস্থাতেই অক্সিজেন নষ্ট করা যাবে না। আর তাই করোনা চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি হাসপাতালকেই সঠিক ভাবে অক্সিজেনের প্রেসক্রিপশন করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। সেখানে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, যে রোগীর অক্সিজেন চলছে তার ক্ষেত্রে প্রতি নোট-শিটে উল্লেখ করতে হবে প্রতি মিনিটে কত লিটার অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে, কী পদ্ধতিতে দেওয়া হচ্ছে এবং লক্ষ্য মাত্রা কী রাখা হয়েছে।
অক্সিজেনের যথাযথ ব্যবহারের জন্য সোমবার একটি নির্দেশিকাও জারি করেছে স্বাস্থ্য ভবন। তাতে আরও জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে রোগীকে অক্সিজেন দেওয়ার পরে যথাযথ ভাবে তাঁকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। যথা সময়ে মাত্রা বাড়াতে হবে, আবার যখন শরীরের অক্সিজেন মাত্রা স্বাভাবিক হবে তখন তা খুলে নিতে হবে। প্রয়োজনে পুনরায় চালু করার কথাও বলা হচ্ছে। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এতে অক্সিজেন সাশ্রয় যেমন হবে, তেমন রোগীর দিক থেকেও জরুরি। মনে রাখতে হবে অপ্রয়োজনীয় ভাবে অক্সিজেন বেশি দিয়ে লাভ হয় না।’’
করোনা মোকাবিলায় অক্সিজেন সরবরাহ, রক্ষণাবেক্ষণ সহ বিভিন্ন বিষয়ে কোভিড চিকিৎসায় যুক্ত সরকারি হাসপাতালগুলি যাতে সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তার জন্য বুধবার অ্যাডভাইজ়রি প্রকাশ করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। তাতে জানানো হয়েছে, যে সংস্থা এত দিন ধরে অক্সিজেন সরবরাহ, রক্ষণাবেক্ষণ-সহ অন্য কাজ করছিল, তাদেরই পুনরায় বহাল রাখার বিষয়ে মেডিক্যাল কলেজের সুপার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানোর প্রয়োজন নেই। এমনকি কোভিড ব্যবস্থাপনার তহবিল থেকেই ওই কাজে খরচ করা যাবে। জেলা, মহকুমা হাসপাতালের ক্ষেত্রে সুপার বা জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। এটাও জানানো হয়েছে যে, অতিরিক্ত সিলিন্ডারের প্রয়োজন হলে প্রথমে যে সংস্থা সরবরাহ করছে তাদের কাছে প্রস্তাব দিতে হবে, তারা না পারলে অন্য সংস্থার থেকে নেওয়া যেতে পারে। যে কোনও অসুবিধায় মেডিক্যাল অক্সিজেন কন্ট্রোল রুমে জানাতে হবে। বাজারে অক্সিজেন সিলিন্ডারের আকাল, তাই সেটি ভাড়া নেওয়ার বিষয়টিকেও অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে সরবরাহকারী সংস্থাকে বলতে হবে বাণিজ্যিক সিলিন্ডারটিকে মেডিক্যাল অক্সিজেন সিলিন্ডারে রূপান্তর করার জন্য। এমনই বিভিন্ন ওই অ্যাডভাইজ়রিতে জানানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, অক্সিজেন ছাড়াও কোভিড ব্যবস্থাপনায় আরও কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা করছে স্বাস্থ্য দফতর। যেমন, কোভিড চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের মানসিক বা শারীরিক চাপ যাতে কোনও ভাবেই বেড়ে না যায় তার জন্য ৮ ঘণ্টার ডিউটি রোস্টার তৈরির উপরে জোর দিতে বলা হয়েছে। আবার সমস্ত হাসপাতালেই দফতর নির্দেশিত কোভিড প্রোটোকল সঠিক ভাবে মানা হচ্ছে কি না তা দেখতে হাসপাতাল পরিদর্শন করবেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা। যদি কোনও হাসপাতালের ক্ষেত্রে গাফিলতি ধরা পরে তাহলে যথাযথ ব্যবস্থাও নেবে স্বাস্থ্য দফতর।
এছাড়াও প্রতিটি হাসপাতালে স্টেরয়েড ওষুধ ব্যবহারও যাতে ঠিকঠাক ভাবে করা হয় সে বিষয়েও নজর দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিনই করোনা চিকিৎসার সঙ্গে যুক্তদের প্রশিক্ষণও দেবে স্বাস্থ্য দফতর। অন্যদিকে প্রবীণ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অধীনে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডও ভাগ করে দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে। যাতে ওই চিকিৎসক ও তাঁর দলের অধীনে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের করোনা রোগীদের চিকিৎসা হয়।