Plasma Therapy

প্লাজ়মা চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে নতুন নির্দেশিকা

এ রাজ্যের চিকিৎসক, ইমিউনোলজিস্টদের একাংশের বক্তব্য, আইসিএমআরের গবেষণা বলছে, করোনা রোধে সিপিটি সহায়ক নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২০ ০৪:৪২
Share:

—ফাইল চিত্র

কোভিডে কনভালসেন্ট প্লাজ়মা থেরাপির সাফল্যের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে সারা দেশে ৩৯টি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মাঝারি মাপের করোনা অসুস্থ রোগীদের উপরে ‘ট্রায়াল’ পরিচালনা করেছিল আইসিএমআর। বস্তুত, সেই গবেষণার (প্লাসিড ট্রায়াল) পর্যবেক্ষণকে উদ্ধৃত করে সিপিটি নিয়ে সাম্প্রতিক নির্দেশিকাটি জারি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সিপিটি-র যথেচ্ছ ব্যবহার কাম্য নয়। এর পর নির্দেশিকার বক্তব্য, কয়েকটি নির্দিষ্ট মাপকাঠির নিরিখেই একমাত্র কনভালসেন্ট প্লাজ়মা থেরাপি ব্যবহার করা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার এখনকার নীতি হল, প্লাজ়মা-দাতার দেহে কোভিডের মোকাবিলায় যথেষ্ট সংখ্যক অ্যান্টিবডি থাকতে হবে। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, করোনায় আক্রান্ত প্লাজ়মা-গ্রহীতার দেহে আগে থেকে আইজিজি অ্যান্টিবডি উপস্থিত থাকলে সিপিটি নিরর্থক। উপসর্গ ফুটে ওঠার তিন-সাত দিনের মধ্যে আক্রান্তকে প্লাজ়মা দেওয়ার কথা বলেছে আইসিএমআরের সাম্প্রতিক নির্দেশিকা। কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার মতে, দশ দিন কেটে গেলে প্লাজ়মা দেওয়া বৃথা।

Advertisement

এ রাজ্যের চিকিৎসক, ইমিউনোলজিস্টদের একাংশের বক্তব্য, আইসিএমআরের গবেষণা বলছে, করোনা রোধে সিপিটি সহায়ক নয়। আবার অ্যাডভাইজ়রি জারি করে গোড়ায় সিপিটি ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে! অ্যাপোলো গ্লেনেগ্‌লস-এর মেডিসিন বিশেষজ্ঞ শ্যামাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘‘শুরু থেকে গোড়ায় সিপিটি দেওয়ার কথা বলে আসছি। উপসর্গ ফুটে ওঠার ৩-৭ দিনের তুলনায় ৫-৭ দিনের মধ্যে সিপিটি দিলে আরও ভাল ফল মিলবে।’’ বঙ্গে রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে প্লাজ়মা সংক্রান্ত ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে কাউন্সিল ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর) এবং ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজি (আইআইসিবি)। সেই গবেষণার অন্যতম শরিক কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইমিউনোহেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রান্সফিউশন বিভাগের প্রধান প্রসূন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কাদের প্লাজ়মা দিলে কাজ হবে সেটা বিচার করা খুব জরুরি। শুরু থেকে এর উপরে জোর দিয়েছি। প্লাজ়মা দেওয়ার পরে রোগীর শারীরিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার প্রশ্নে চিকিৎসকের দক্ষতাও বিচার্য বিষয়। যাক করোনার চিকিৎসায় সিপিটি’র ব্যবহারের ভাবনাকে আইসিএমআর তাহলে একেবারে বাতিল করে দেয়নি!’’ ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজির ইমিউনোলজিস্ট দীপ্যমান গাঙ্গুলি এদিন জানান, তাঁদের গবেষণার কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। শীঘ্র গবেষণা থেকে উঠে আসা পর্যবেক্ষণ প্রকাশিত হবে। তাতে ‘চমক’ থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

মেডিকার সিসিইউ ইনচার্জ তথা ইন্টারনাল মেডিসিনের চিকিৎসক অমিতাভ সাহা জানান, কাদের প্লাজ়মা নেওয়া হবে, কতদিনের মধ্যে নিতে হবে এবং দাতার দেহে অ্যান্টিবডির মাত্রা কতখানি থাকতে হবে, তা অ্যাডভাইজ়রিতে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এই স্পষ্টতা এতদিন ছিল না। যার ফলে বিভিন্ন ব্লাড ব্যাঙ্কে প্লাজ়মা সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। সেদিক থেকে কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থার অ্যাডভাইজ়রিকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement