TMC Infighting

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভেও অন্তর্দ্বন্দ্ব তৃণমূলে, বালিগঞ্জ থেকে বাঁকুড়া— অস্বস্তিতে শাসক

কলকাতার বালিগঞ্জ এবং বাঁকুড়ার খাতড়ায় প্রকাশ্যে চলে এল তৃণমূলের অন্দরের বিবাদ। বালিগঞ্জের ঘটনা দু’পক্ষের বচসার মধ্যে সীমিত থাকলেও, বাঁকুড়ায় দলীয় বিবাদ গড়াল মারধর পর্যন্ত।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২৩ ২৩:১৪
Share:

(বাঁ দিকে) বালিগঞ্জে বচসায় জড়ালেন বাবুল সুপ্রিয়। বাঁকুড়ার খাতড়ায় তৃণমূলের ‘গোষ্ঠী কোন্দল’। —ফাইল চিত্র।

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচিতেও ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’ এড়াতে পারল না শাসকদল তৃণমূল। কলকাতার বালিগঞ্জ এবং বাঁকুড়ার খাতড়ায় প্রকাশ্যে চলে এল দলের অন্দরের বিবাদ। বালিগঞ্জের ঘটনা দু’পক্ষের বচসার মধ্যে সীমিত থাকলেও, বাঁকুড়ায় দলীয় বিবাদ গড়াল মারধর পর্যন্ত। হাসপাতালে ভর্তি করাতে হল দলের এক ব্লক সভাপতিকে। এই দুই ঘটনার জেরে যারপরনাই অস্বস্তিতে পড়তে হল শাসকদলকে।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, দু’টি ঘটনাতেই বিতর্কের কেন্দ্রে থাকলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী— বাবুল সুপ্রিয় এবং জ্যোৎস্না মান্ডি। বালিগঞ্জে যেমন মন্ত্রী বাবুলের বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছেন দলীয় কর্মীদের একাংশ, তেমনই বাঁকুড়ায় আবার জ্যোৎস্নার অনুগামীদের বিরুদ্ধে দলের এক ব্লক সভাপতিকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে বাবুল এখনও প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য না করলেও জ্যোৎস্না সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা।

কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ বাতিল হয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের ঘোষিত ‘বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও’ কর্মসূচি। এর পরেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনা, সন্ত্রাস ও অত্যাচারের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে ধর্না কর্মসূচির ঘোষণা করে শাসকদল। গত বুধবার এই কর্মসূচির কথা জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো রবিবার কলকাতা তো বটেই, রাজ্যের সব জেলার ব্লকে ব্লকে তৃণমূলের এই ধর্না কর্মসূচি পালিত হয়। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম প্রথমে নিজের ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের কর্মসূচিতে যোগ দেন। পরে তিনি যান নিজের বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দরের খিদিরপুরের ধর্নামঞ্চে। মন্ত্রী শশী পাঁজা যান শ্যামপুকুরের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে। কালিন্দির কর্মসূচিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন মন্ত্রী সুজিত বসু। কিন্তু বিতর্ক বাধল গড়িয়াহাটের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে। প্রকাশ্যেই বিবাদে জড়াতে দেখা গেল বাবুল এবং কলকাতা পুরসভার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের অনুগামীদের। সভামঞ্চে থাকা দলীয় কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, বাবুল তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। এক বক্তার হাত থেকে মাইক কেড়ে বক্তৃতা করারও অভিযোগ উঠেছে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। তৃণমূল নেতা জ্যোতির্ময় মুখোপাধ্যায় জানান, অবস্থানে এলে বাবুলকে বসার জন্য চেয়ার এগিয়ে দেন সুর্দশনা। কিন্তু ‘মেজাজ’ দেখিয়ে অসম্মান করেন বাবুল। পাল্টা, বাবুলের অনুগামী বলে পরিচিত দলীয় কর্মীদের দাবি, মন্ত্রীকেই অসম্মান করা হয়েছে। এ নিয়ে বাবুল বা সুদর্শনা কেউই প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি। প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানেও বাবুল এবং সুদর্শনার অনুগামীদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছিল।

Advertisement

কিন্তু সব চেয়ে বেশি বিতর্ক দানা বেঁধেছে বাঁকুড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সেখানে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে, ব্লক সভাপতিকে ধর্নামঞ্চ থেকে কার্যত তাড়া করে পাশের গলিতে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল দলেরই অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে! দলীয় সূত্রে খবর, খাতড়ার করালি মোড়ে ধর্না কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। অভিযোগ, অবস্থান বিক্ষোভ চলাকালীন দলেরই এক গোষ্ঠী মিছিল করে এসে ধর্নামঞ্চে অশান্তি শুরু করে। সেই সময় হামলার আশঙ্কায় ধর্নামঞ্চ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন দলের খাতড়া ব্লক সভাপতি সুব্রত মহাপাত্র। পালিয়ে পাশের গলিতেও চলে যান তিনি। অভিযোগ, সেই সময় বেশ কয়েক জন যুবক তাঁকে তাড়া করে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করেন। দলের ব্লক সভাপতিকে মারধরের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তৃণমূলের টিকিটে জেলা পরিষদের আসনে জয়ী কল্পনা মণ্ডল এবং তৃণমূলের স্থানীয় এক অঞ্চল সভাপতি। অভিযোগ, ওই যুবকদের কিল, চড়, ঘুসি ও লাঠির আঘাতে গুরুতর জখম হন তিন জন। আহত ব্লক সভাপতি বলেন, ‘‘সম্প্রতি দলের এক অঞ্চল সভাপতির নাম ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিবাদ শুরু হয় এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্য দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির সঙ্গে। সেই ঘটনার জেরেই মন্ত্রী ঘনিষ্ঠরা আমাদের উপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে।’’ একই অভিযোগ করেছেন কল্পনাও। তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জ্যোৎস্না। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি যাঁকে ব্লক সভাপতি করেছি, তাঁকে কেন মারতে যাব? সংগঠন যাতে ঠিকঠাক চলে, সেই চেষ্টাই আমার রয়েছে। অঞ্চল সভাপতির নাম ঘোষণা নিয়ে ব্লক সভাপতির সঙ্গে দ্বন্দ্বের অভিযোগও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’

এই দু’টি ঘটনার প্রেক্ষিতে শাসকদলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানাতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে সন্ত্রাসের অভ্যাসটা লোকসভা পর্যন্ত বজায় রাখতে নিজেদের মধ্যে নেট প্র্যাকটিস করছে। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার তত্ত্ব আসলে জনগণকে প্রতারণার ফন্দি। আগে নিজেরা নিজেদের মধ্যে মিটমাট করে নিক। তার পরে বাকিটা দেখা যাবে।’’ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনার থেকেও এরা নিজেদের বঞ্চনা নিয়ে বেশি উৎকণ্ঠিত। যার বখরায় টান পড়ছে, সে গিয়ে মারধর করছে। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াই করছে একমাত্র বামেরা।’’ এ বিষয়ে শাসক তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ অবশ্য বলেন, ‘‘দুটো ঘটনার কোনওটা জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে রবিবার সর্বত্রই সরব হতে দেখা গিয়েছে শাসকদলের রাজ্য এবং জেলার নেতাদের। বাঁকুড়ার ২২টি ব্লক এবং তিনটি পুরসভার প্রতিটিতেই একটি করে ধর্না মঞ্চ করে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। রবিবার বেলা ১২টা থেকে এই ধর্না শুরু হয়। চলে বিকেল প্রায় ৪টে পর্যন্ত। বাঁকুড়ার সার্কিট হাউস মোড়ে আয়োজিত ধর্না মঞ্চ থেকে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের বাঁকুড়া শহর সভাপতি শ্যামসুন্দর দত্তের মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিজেপির বিধায়ক ও সাংসদদের হুঁশিয়ারি দিয়ে শ্যামসুন্দর বলেন, ‘‘২০২৪-এর আগে এ রাজ্যের বকেয়া টাকা কেন্দ্র মিটিয়ে না দিলে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থীরা প্রচারে বেরোতে পারবেন না। শ্রমিক যে দিন ক্ষেপে উঠবে এবং তাঁদের পেটে টান পড়বে, সে দিন বিজেপির সাংসদ, বিধায়কেরা বাড়ি থেকে বেরোতে পারবেন না।’’ পরে নিজের মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে শ্যামসুন্দর বলেন, ‘‘শ্রমিকদের মজুরি বছরের পর বছর ধরে বকেয়া। শ্রমিকেরা ক্ষেপে উঠছে। শ্রমিকেরা ক্ষেপে গেলে তাঁরাই বিজেপির বিধায়ক, সাংসদদের গৃহবন্দি করে রাখবে।’’ পাল্টা বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রিশেখর দানা বলেন, ‘‘তৃণমূল চোর জোচ্চোরের দল। তাই সেই দলের কে বা কারা কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না। বছরের পর বছর ধরে কেন্দ্র কোটি কোটি টাকা পাঠাবে আর তৃণমূল নেতারা তা চুরি করবে, এ সব হবে না। রাজ্য আগে টাকার হিসাব দেওয়ার ব্যবস্থা করুক, তার পর কেন্দ্রের কাছে টাকা চাইবে। ২০২৪-এর নির্বাচনে আমাদের প্রচার না করতে দেওয়ার তৃণমূল কে? সরকারি ভাবে পুলিশ ও প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে আমাদের প্রচারে বাধা দেওয়া হলে আদালতের মাধ্যমে আমরা সেই অধিকার আদায় করে নেব।’’

এ সবের মধ্যেও তৃণমূলের বাংলা জুড়ে এই কর্মসূচিতে খানিক বৈচিত্র এনে দিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের ঘটনা। সেখানে শাসকদলের সভামঞ্চে উঠে বক্তৃতা করতে দেখা গেল বিজেপি বিধায়ক সত্যেন রায়কে। যিনি একদা তৃণমূলেরই নেতা ছিলেন। গঙ্গারামপুর থানা এলাকায় ঠাঙাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের বাতাসকুড়ি মোড়ে মঞ্চ বেঁধে বক্তৃতা করছিলেন শাসকদলের নেতারা। সেই সভামঞ্চ থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বেই সত্যেনের বাড়ি। স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার সকালে বিধায়ক গঙ্গারামপুরের পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের একটি বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। দুপুর নাগাদ ফেরার সময় তিনি দেখেন, বাড়ির সামনে তৃণমূলের সভা হচ্ছে। গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে ঘিরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানও দেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরা। সেই সময়েই আচমকা গাড়ি দাঁড় করিয়ে নেমে সোজা মঞ্চে উঠে প়ড়তে দেখা যায় সত্যেনকে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রাজ্যের প্রাপ্য টাকা আটকে দেওয়া নিয়ে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছিল, তার পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে শাসকদলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বিধায়ককে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়তেও দেখা যায়।

এই ঘটনাকে ‘নৈতিক জয়’ হিসাবেই দেখতে চাইছে শাসকদল। তাদের দাবি, কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার প্রতি যে বঞ্চনা করছে, তা মেনে নিয়েছেন বিধায়ক। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার বলেন, ‘‘এটা আমাদের নৈতিক জয়। বিধায়ক মঞ্চে উঠে এসে তৃণমূলের দাবিকেই মান্যতা দিলেন। উনি কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কথা স্বীকারও করেছেন।’’ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সত্যেন। তাঁর বক্তব্য, রাজনৈতিক সৌজন্যের খাতিরেই তিনি তৃণমূলের মঞ্চে গিয়েছিলেন। বিধায়কের কথায়, ‘‘ওদের অনেক প্রশ্ন ছিল। তার উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরেছি। চেষ্টা করেছি ওদের অভিযোগগুলো খণ্ডন করার।’’

রবিবার বাংলা জুড়ে সর্বত্রই দলীয় কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের বিধায়ক, স্থানীয় নেতাদের। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুর উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত গড়িয়া ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকায় দলের ধর্নামঞ্চে যান বিধায়ক ফিরদৌসি বেগম। সোনারপুর দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের আড়াপাঁচে অবস্থান বিক্ষোভে অংশ নেন বিধায়ক লাভলি মৈত্র। হাওড়া ময়দানের মেট্রো চ্যানেলে নেতৃত্ব দেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী তথা মধ্য হাওড়ার বিধায়ক অরূপ রায়। পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রাম জেলা জুড়েও পালিত হয় এই ধর্না কর্মসূচি। পূর্ব বর্ধমান জেলার অন্তর্গত বর্ধমান শহরের কার্জনগেট চত্বরে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যান বর্ধমান দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক খোকন দাস। পশ্চিম বর্ধমান জেলার পান্ডবেশ্বরে জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, আসানসোল বাসস্ট্যান্ডে পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, বারাবনিতে মেয়র বিধান উপাধ্যায়ও দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement