—নিজস্ব চিত্র।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তাল হল তৃণমূলের ধর্নামঞ্চ। পরিস্থিতি এমন যে, ব্লক সভাপতিকে ধর্নামঞ্চ থেকে কার্যত তাড়া করে পাশের গলিতে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল দলেরই অপর গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে! বাঁকুড়ার খাতড়ার ঘটনা। এই ঘটনায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি-সহ আহত হয়েছেন মোট তিন জন। তাঁদের খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ব্লক সভাপতির উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির অনুগামীদের বিরুদ্ধে। মন্ত্রী অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগকেও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী। যদিও এই ঘটনা নিয়ে এখনও কোনও পক্ষই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি বলে খবর মিলেছে।
কেন্দ্রের বঞ্চনার অভিযোগে ও তার প্রতিবাদে রবিবার দুপুরে রাজ্য জুড়ে ব্লক স্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। বাঁকুড়ার খাতড়ার করালি মোড়ে সেই ধর্না কর্মসূচির মঞ্চেই বিবাদে জড়াল শাসকদলের যুযুধান দুই পক্ষ। দলীয় সূত্রে খবর, অবস্থান বিক্ষোভ চলাকালীন দলেরই এক গোষ্ঠী মিছিল করে এসে ধর্নামঞ্চে অশান্তি শুরু করে। সেই সময় হামলার আশঙ্কায় ধর্নামঞ্চ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেন দলের খাতড়া ব্লক সভাপতি সুব্রত মহাপাত্র। পালিয়ে পাশের গলিতেও চলে যান তিনি। অভিযোগ, সেই সময় বেশ কয়েক জন যুবক তাঁকে তাড়া করে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করেন। দলের ব্লক সভাপতিকে মারধরের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তৃণমূলের টিকিটে জেলা পরিষদের আসনে জয়ী কল্পনা মণ্ডল এবং তৃণমূলের স্থানীয় এক অঞ্চল সভাপতি। অভিযোগ, ওই যুবকদের কিল, চড়, ঘুসি ও লাঠির আঘাতে গুরুতর জখম হন তিন জন।
তৃণমূল সূত্রে খবর, পরে সুব্রত-সহ তিন জনকেই ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে খাতড়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আহত ব্লক সভাপতি বলেন, ‘‘সম্প্রতি দলের এক অঞ্চল সভাপতির নাম ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিবাদ শুরু হয় এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের খাদ্য দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির সঙ্গে। সেই ঘটনার জেরেই মন্ত্রী ঘনিষ্ঠরা আমাদের উপর হামলা চালিয়ে বেধড়ক মারধর করেছে।’’ তৃণমূলের সদ্য নির্বাচিত জেলা পরিষদ সদস্যা কল্পনাও বলেন, ‘‘বেলা ১২টা থেকে শান্তিপূর্ণ ধর্না চলছিল। পৌনে ৩টে নাগাদ মন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডির নেতৃত্বে একটি মিছিল ধর্না মঞ্চে এসে হামলা চালায়। আমাদের মারধর করা হয়েছে। ঘটনায় ব্লক সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতি-সহ আমরা তিন জন আহত হয়েছি।’’
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জ্যোৎস্না মান্ডি। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি যাকে ব্লক সভাপতি করেছি, তাঁকে কেন মারতে যাব? সংগঠন যাতে ঠিকঠাক চলে, সেই চেষ্টাই আমার রয়েছে। অঞ্চল সভাপতির নাম ঘোষণা নিয়ে ব্লক সভাপতির সঙ্গে দ্বন্দ্বের অভিযোগও সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’’