প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্কল্প শিবিরে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক এ চেল্লা কুমার, প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী প্রমুখ। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে ‘নব সঙ্কল্প শিবির’ করতে গিয়ে প্রথম দিনে একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে পড়তে হল কংগ্রেসের নেতৃত্বকে। দলের নীতি, কৌশল থেকে শুরু করে কর্মসূচি বা তহবিল, প্রশ্ন উঠে এল নানা বিষয়েই। বামেদের সঙ্গে ঝোট করার পরে আবার তৃণমূলের হাত ধরার কথা এআইসিসি বলবে কি না, শিবিরে ছিল সেই প্রশ্নও।
উদয়পুরে এআইসিসি-র ‘নব সঙ্কল্প শিবির’ হওয়ার পরে এখন রাজ্যে রাজ্যে একই রকম শিবির অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিধান ভবনে শনিবার শুরু হওয়া এ রাজ্যের শিবিরে আছেন এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক এ চেল্লাকুমার, সহ-পর্যবেক্ষক শরদ রাউত ও বি পি সিংহ এবং দলের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কর্তৃপক্ষের তরফে পর্যবেক্ষক কেশব সিংহ। শিবিরের প্রারম্ভিক বার্তায় পর্যবেক্ষক চেল্লাকুমার ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী উদয়পুরের সঙ্কল্প শিবিরে গৃহীত রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক নীতি (পাঁচ বছরের মেয়াদ, ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’-সহ) ব্যাখ্যা করেন। তার পরে বলতে উঠে নানা প্রশ্ন তোলেন রাজ্য ও জেলা স্তরের নেতারা। উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে শিবিরের প্রথম দিনে দেখা যায়নি আব্দুল মান্নান, দেবপ্রসাদ রায়, দীপা দাশমুন্সি, সন্তোষ পাঠকদের। এ ছাড়া, অমিতাভ চক্রবর্তী রয়েছেন এআইসিসি-র দেওয়া দায়িত্ব পালন করতে ওড়িশায়।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, সম্প্রতি কলকাতা হাই কোর্টে মামলার সওয়াল করতে আসা পি চিদম্বরমের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের সূত্রে দলের আইনজীবী-নেতা কৌস্তুভ বাগচী এআইসিসি নেতাদের সামনে প্রশ্ন তোলেন, দলের নীতি কী? রাজ্যে প্রতিটা নির্বাচনে কংগ্রেস কর্মীরা শাসক তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত, হেনস্থা হবেন আবার কংগ্রেসের সর্বভারতীয় নেতারা সেই রাজ্য সরকারের হয়ে মামলা লড়তে আসবেন, এটা কী ভাবে হতে পারে? বামেদের সঙ্গে সমঝোতা করার পরে আবার কি তৃণমূলের সঙ্গে জোট করতে বলা হবে? বাংলার কংগ্রেস কর্মীরা কি ‘গিনিপিগ’ হয়েই থাকবেন? চেল্লাকুমার অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট রাজ্যের কংগ্রেস কর্মীদের অপমানিত হতে হয়, এমন কোনও সিদ্ধান্ত এআইসিসি নেবে না। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আঞ্চলিক দলে ভরসা নয়, কংগ্রেসই যে মুখ্য শক্তি— উদয়পুরের শিবিরে রাহুল গান্ধীর এই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন অধীরবাবু।
রাহুলকে সামনে রেখেই সর্বভারতীয় স্তরে পদযাত্রা করবে কংগ্রেস। তার আগে রাজ্য স্তরেও পদযাত্রার কর্মসূচি নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু জেলার একাধিক নেতা এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন, দলের তহবিল কোথায়? ভোটে লড়াই করার জন্য পর্যাপ্ত টাকাই দলের কাছ থেকে পাওয়া যায় না! কংগ্রেসের সদস্যপদের চাঁদা এখন ৫ টাকা। আর যুব কংগ্রেসের যে নির্বাচন প্রক্রিয়া এখন চলছে, সেখানে সদস্যপদ নিতে হচ্ছে ৫০ টাকা দিয়ে। যুব সংগঠনের চাঁদা কেন ৫০ টাকা, উঠেছে সেই প্রশ্নও।
শিবিরের অবসরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘উদয়পুরের শিবিরের প্রস্তাবকে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করছি আমরা। এর পরে জেলায় ও ব্লকেও চিন্তন শিবির করা হবে।’’ রাজ্যে দু’দিনের সঙ্কল্প শিবির শেষ হবে আজ, রবিবার।