প্রতীকী ছবি।
সেই চাল-ডাল-আলু-চিনি-সাবান। উৎসবের মাসে স্কুলপড়ুয়া আর অনেক অভিভাবক মিড-ডে মিলে ডিম-সয়াবিনের মতো বাড়তি কিছু পাওয়ার আশা করছিলেন। কিন্তু পুজোর মাস অক্টোবরে দুপুরের খাবারের সামগ্রী হিসেবে কী কী দেওয়া হবে, তা ঘোষণা করা হয়েছে সেপ্টেম্বরেই। বাড়তি কিছু তো মিলছেই না। এমনকি যে-সব জিনিস দেওয়ার কথা, বুধবার, মহালয়াতেও সেগুলো বিতরণ করা হয়নি। শিক্ষা দফতরের কর্তাদের আশ্বাস, চলতি মাসে মিড-ডে মিলের সামগ্রী খুব তাড়াতাড়িই দেওয়া হবে।
সেই ‘তাড়াতাড়ি’ মানে কবে, প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। তাঁরা জানাচ্ছেন, পুজোর আগে আর মাত্র দিন দুয়েক স্কুল খুলে সামগ্রী বিতরণের সুযোগ থাকছে। তার মধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারি করে মিড-ডে মিলের জিনিসপত্র অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া কার্যত অসম্ভব। সে-ক্ষেত্রে গোটা পুজো পর্বে ওই সব জিনিসের স্কুলে পড়ে থাকার সম্ভাবনাই বেশি। শিক্ষক ও অভিভাবকদের একাংশের বক্তব্য, পুজোর ছুটি পড়ার আগেই মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিতরণ করা গেলে অনেক গরিব পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হত।
স্কুলশিক্ষা দফতর সেপ্টেম্বরের ৬ তারিখেই জানিয়ে দিয়েছে, অক্টোবরে মিড-ডে মিলে কী কী সামগ্রী দেওয়া হবে। সেই সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে দু’কিলোগ্রাম চাল, দু’কিলোগ্রাম আলু, ২৫০ গ্রাম চিনি, ২৫০ গ্রাম ডাল এবং একটি সাবান। গত মাসেরই মতো। শিক্ষকদের একাংশের মতে, পুজোর মাসে অন্তত পড়ুয়া-পিছু একটু বরাদ্দ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সামগ্রীর সংখ্যা বাড়ালে পড়ুয়া-অভিভাবকেরা খুশি হতেন। বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হণ্ডা বলেন, “আমরা অনেক দিন ধরেই দাবি জানিয়ে আসছি, পড়ুয়াদের পুষ্টির জন্য নিয়মিত সয়াবিন বা ডিম দেওয়া হোক। বাড়ানো হোক ডালের পরিমাণ। বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজো। এই মাসে অন্তত পুজোর আগে মিড-ডে মিলের সামগ্রী বিতরণ হয়ে গেলে ভাল হত। সেই সঙ্গে ডিম বা সয়াবিন দেওয়া হলে খুব খুশি হত পড়ুয়ারা। ওদের পুষ্টিও হত ভাল।”
পুজোর মাসে না-হলেও অচিরেই পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের সামগ্রী বাড়ার সম্ভাবনা আছে বলে জানান শিক্ষা দফতরের এক কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘সারা বছরের মিড-ডে মিলের জন্য যে-অর্থ বরাদ্দ হয়, তার থেকে অর্থ বেঁচে গেলে ৩১ মার্চ, অর্থবর্ষ শেষের আগে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চে মিড-ডে মিলের সামগ্রী বাড়ানো হয়। তালিকায় যুক্ত হয় সয়াবিন, ছোলা। গত বার সামগ্রীর সংখ্যা বেড়েছিল। এ বারেও বাড়তি কিছু জিনিস দেওয়া হতে পারে।”
এক শ্রেণির ছাত্রছাত্রী জানাচ্ছে, অনেক স্কুলেই পুজোর ছুটি পড়ার দিনে বা তার আগের দিনে মিড-ডে মিলে ‘স্পেশাল মেনু’ যোগ হয়। স্কুল নিজেদের তহবিল থেকে টাকা দিয়ে দুপুরের খাবারের রোজকার পদের সঙ্গে অতিরিক্ত পদ হিসেবে মাংস বা অন্য কিছু দেয়। মিষ্টি বা পায়েসও খাওয়ানো হয়। বনভোজনের মতো করে চলে সেই খাওয়াদাওয়া। স্কুলে পড়াশোনা তো বন্ধই। সেই সঙ্গে দল বেঁধে এই ধরনের খাওয়াদাওয়ার মধ্যে যে-মজা ছিল, তারও অভাব বোধ করছে তারা।