মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ি চালানো যে আইনত অপরাধ, তা ইতিমধ্যে ঘোষণা করে দিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। নিজস্ব চিত্র।
পরিবহণ দফতরের বিরুদ্ধেই মেয়াদ উত্তীর্ণ বাস চালানোর অভিযোগ উঠল। অভিযোগ করেছেন বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠনের ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’। সম্প্রতি একটি সরকারি বাসের ছবি প্রকাশ্যে এনেছে তারা, সঙ্গে ওই সরকারি বাসটির যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয়েছে জনসমক্ষে। ডব্লিউবি ০৪সি৯৭৬৭ নম্বরের ওই বাসটি বর্তমানে সল্টলেক এআরটিও-র অন্তর্ভুক্ত। বাসটির রেজিস্ট্রেশনের তারিখ জানানো হয়েছে, ২ এপ্রিল, ২০০৭। এবং ওই নথিতে বলা হয়েছে, গাড়িটির বর্তমান বয়স ১৬ বছরের বেশি। ডিজেল চালিত ওই সরকারি বাসটি কলকাতার রাস্তায় চলাচল করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এমন তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পরিবহণ দফতরের দায়বদ্ধতা নিয়ে। কারণ মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ি চালানো যে আইনত অপরাধ, তা ইতিমধ্যে ঘোষণা করে দিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। কোনও ব্যক্তি যদি কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে কোনও মেয়াদ উত্তীর্ণ গাড়ি চালান, তবে তাঁকে আইন অনুসারে শাস্তির মুখে পড়তে হয়। গুনতে হয় মোটা টাকার জরিমানা। তাই প্রশ্ন উঠছে, কী ভাবে নিজেদের দায়িত্ব প্রসঙ্গে এমন অসতর্ক থাকতে পারে পরিবহণ দফতর?
যে বেসরকারি বাসমালিকদের সংগঠন বিষয়টি প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে, তারা অবশ্য তাদের এই তথ্য প্রকাশের ঘটনাকে কোনও রকম অভিযোগ বলতে নারাজ। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস অ্যান্ড মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনে’র নেতা প্রদীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘আমরা যে বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছি, তাকে কোনও ভাবেই অভিযোগ বলা যাবে না। কারণ, নির্দিষ্ট বয়সের পর কোনও গাড়ি আর চালানো উচিত নয়, তা শুধু নিয়মই নয়, তা আমাদের দায়িত্বের মধ্যেও পড়ে। আমরা যারা সরাসরি পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, তারা পরিবেশ ও আইন রক্ষার প্রতি দায়বদ্ধ। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই আমরা মেয়াদ উত্তীর্ণ সরকারি বাস চালানোর বিষয়টি জনসমক্ষে তুলে ধরেছি।’’ এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় কিছুটা হলেও বিব্রত পরিবহণ দফতরের শীর্ষকর্তারা। তবে এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে পরিবহণ দফতরের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌমেন মাইতি বলেন, ‘‘১৫ বছরের ঊর্ধ্বে কোনও সরকারি বাস রাস্তায় চলছে বলে আমাদের কাছে খবর নেই। যে বাসটির কথা বলা হচ্ছে, সেটি বর্তমানে কোন ডিপোতে রয়েছে, সে বিষয়ে সবার আগে খোঁজ নিতে হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সাধারণত ১৪ বছর হয়ে গেলেই কোনও সরকারি বাসকে আর রাস্তায় নামানো হয় না। পরিবহণ দফতর সেই নিয়ম মেনেই চলে। তবু বিষয়টি নিয়ে যখন অভিযোগ উঠেছে, সেই প্রসঙ্গে খোঁজ নেওয়া প্রয়োজন। দফতর অবশ্যই এই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে অভিযোগের সত্যতা জানার চেষ্টা করবে।’’