অভিষেক-শুভেন্দুর কর্মসূচি। ফাইল চিত্র।
দু’জনেই পরস্পরের প্রতিপক্ষ! কিন্তু একটি বিন্দুতে এসে তাঁরা যেন একই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। আবার পরস্পরের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক আক্রমণ শানানোর সূচনায় একই দিনকে বেছে নিয়েছেন এই দুই নেতা। তাঁদের একজন হলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দ্বিতীয় জন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত সপ্তাহে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছিল প্রবল দাবদাহ। সঙ্গে এক মাস ব্যাপী রোজার পর ইদের প্রস্তুতি চলছিল। তাই দুই শিবিরের দুই যুযুধান সেনাপতি নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। শনিবার হয়ে গিয়েছে ইদ। আর গরমের পারদ ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে। তাই এ বার শাসক-বিরোধী দুই শিবিরের দুই নেতা ফের রাজনৈতিক মঞ্চে অবতীর্ণ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী মঙ্গলবার থেকেই নিজেদের রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করবেন শুভেন্দু-অভিষেক।
আগামী ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার থেকে ‘জনসংযোগ যাত্রা’ শুরু করছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কোচবিহার পৌঁছে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দেওয়ার কথা তাঁর। তার পর শুরু হবে তাঁর কর্মসূচি। এই কর্মসূচিতে আগামী ৬০ দিনের সূচি সাজিয়েছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গের কোচবিহারের দিনহাটা থেকে এই কর্মসূচি শুরু করে ৬০তম দিনে তা সাগরে এসে শেষ হবে। গত বৃহস্পতিবার তৃণমূল ভবনে এক সাংবাদিক বৈঠক করে নিজের এই কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন অভিষেক। পঞ্চায়েতে দলের প্রার্থী খুঁজতে ২৫০টি জনসভা করবেন তিনি, সঙ্গে হবে ৬০টি অধিবেশন। ৩০ লক্ষ মানুষের সঙ্গে সরাসরি জনসংযোগ করার পাশাপাশি ৩,৫০০ কিলোমিটার রাস্তা অতিক্রম করবেন তিনি। এই কর্মসূচিতে তিনি অস্থায়ী ছাউনিতে রাত্রিযাপন করবেন। সূত্রের খবর, অভিষেকের এই কর্মসূচি আগেই তৈরি করা হলেও, ইদের কারণেই তা ঘোষণা করা হয়নি। সঙ্গে রাজ্য জুড়ে প্রবল দাবদাহ শুরু হয়ে যাওয়াতে এই কর্মসূচি ঘোষণার সময় কিছুটা হলেও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আর এ বার ইদ শেষ হওয়ার পর গরমে দাপটও কমায় কর্মসূচি শুরুর ক্ষেত্রে আর বিলম্ব চায় না তৃণমূল।
অন্য দিকে, এই সময় বড় কোনও কর্মসূচিতে অংশ নেননি বিরোধী দলনেতা। বরং এই সময়ে তাঁর বিধানসভা নন্দীগ্রাম ও দফতরের কাজ দ্রুত শেষ করার দিকেই মনোনিবেশ করেছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু, শনিবার থেকে উৎসব শেষ হওয়ার পর গরমের দাপট অনেকটাই কমেছে। তাই আবারও বিরোধী দলনেতা নিজের কর্মসূচি শুরু করতে চলেছেন। সূত্রের খবর, আগামী মঙ্গলবার থেকেই রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেন তিনি। এ ক্ষেত্রে তাঁর গন্তব্য হতে পারে পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুর। অভিষেকের মতো দু’মাসের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি না থাকলেও, প্রায় প্রতিদিনই রাজ্যের কোনও না কোনও প্রান্তে তাঁর কর্মসূচি রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উত্তাপ বেড়েছে। তাই স্বাভাবিক নিয়মে গতিবিধি বাড়িয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। সেই পর্যায়েই আগামী কয়েক মাসের মধ্যে উত্তরবঙ্গ সফরেও যেতে পারেন বিরোধী দলনেতা।