অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে চার্জশিট সিবিাইয়ের। — ফাইল চিত্র।
অন্য অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ঘুরপথে কোটি কোটি ‘কালো টাকা’ সাদা করতেন বীরভূম জেলার তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে জমা দেওয়া চার্জশিটে এমনটাই উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (সিবিআই)। ওই কাজে অনুব্রত এক জন প্রাক্তন ব্যাঙ্ককর্মীকেও কাজে লাগিয়েছিলেন। সে কথাও চার্জশিটে উল্লেখ করেছে সিবিআই।
সিবিআইয়ের জমা দেওয়া চার্জশিটের ১১ নম্বর পাতায় উল্লেখ করা হয়েছে ওই অভিযোগের কথা। বলা হয়েছে, সোনাঝুরির একটি হোমস্টের কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ‘কালো টাকা’ সাদা করতেন কেষ্ট। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সল্টলেক এবং বোলপুর শাখায় ছিল অ্যাকাউন্টগুলি। আর এই কাজে তাঁকে সাহায্য করতেন প্রাক্তন এক ব্যাঙ্ককর্মী। চার্জশিটে আরও বলা হয়েছে, ওই ব্যাঙ্ককর্মীকে কখনও বাড়িতে ডেকে তাঁর হাতে টাকা তুলে দিয়েছিলেন অনুব্রত, কখনও বা তিনি অথবা তাঁর গাড়ির চালক পৌঁছে দিতেন টাকা। ২০১৮ সালের শেষ ত্রৈমাসিক থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বেশ কয়েক দফায় ওই ব্যাঙ্ক কর্মীর হাতে ৫ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হয়েছিল বলেও সিবিআইয়ের দাবি। এর পর ওই টাকা অনুব্রত এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতেন ওই ব্যাঙ্ক কর্মী। এই ভাবেই ঘুরপথে আনা টাকা দিয়েই কেষ্ট-কন্যা সুকন্যার নামে ৩ কোটি টাকার স্থায়ী আমানত করা হয়েছিল বলেও দাবি সিবিআইয়ের। এ নিয়ে ভবিষ্যতে আরও তদন্ত করা হবে বলেও চার্জশিটে উল্লেখ করেছে তদন্তকারী সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার বোলপুরের রতনকুঠিতে সিবিআইয়ের অস্থায়ী শিবিরে তলব করা হয়েছিল স্থানীয় প্রোমোটার রানা সরকারকে। সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায় ওরফে মুন নামে যাঁর কথা সিবিআইয়ের চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে রানার। তাঁর হাত দিয়েই সুকন্যার সংস্থা কয়েকটি জমি কিনেছিল বলেও জানা গিয়েছে তদন্তকারীদের সূত্রে। সেই সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হল বলে তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে। বৃহস্পতিবারই বোলপুরের অতিরিক্ত জেলা সাব রেজিস্ট্রার (এডিএসআর)-এর দফতরের প্রতিনিধি ওই এলাকার বেশ কয়েকটি জমির নথি নিয়ে দেখা করেন তদন্তকারীদের সঙ্গে। এডিএসআর-এর কাছে ওই নথি চেয়ে পাঠিয়েছিল সিবিআই।