তাপস রায়ের বক্তব্যকে সমর্থন সৌগত রায়ের। পাশে থাকলেন না লোকসভার দলনেতার। ফাইল চিত্র।
লোকসভার দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখার গুরুতর অভিযোগ এনেছেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। এই বিতর্কে লোকসভার সতীর্থ সুদীপের পাশে দাঁড়ালেন না দমদমের প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। মঙ্গলবার থেকেই তাপস-সুদীপ দ্বন্দ্ব চলছে রাজ্য রাজনীতিতে। বৃহস্পতিবার সেই প্রসঙ্গে প্রথম বার প্রতিক্রিয়া জানান তৃণমূলের কোনও বর্ষীয়ান নেতা। সৌগত বলেন, ‘‘দলে থেকে এমন কোনও কাজ করা উচিত নয়, যাতে কর্মী-সমর্থকদের মনে আঘাত লাগে। তাই তো আমি নিজের দাদার বাড়িতেই যাই না। কারণ তিনি বিজেপি করেন।’’ প্রসঙ্গত, সৌগতর দাদা রাজ্য বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়। এক সময় রাজ্য বিজেপির সভাপতিও ছিলেন। যিনি আবার ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের মতো রাজ্যের রাজ্যপালের দায়িত্ব সামলেছিলেন। এর পরেই সৌগত বলেন, ‘‘আমার দাদা বিজেপির সঙ্গে যুক্ত বলে আমি তাঁর বাড়িতে যাই না। তা বলে দাদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খারাপ, এমনটা নয়। আমি যদি দাদার বাড়িতে যাই তাহলে ভুল বার্তা যেতে পারে। তাই এক দলে থেকে অন্য দলের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখাই ভাল।’’
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে উত্তর কলকাতা বিজেপির সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন তমোঘ্ন ঘোষ। মঙ্গলবারেই সাংবাদিক বৈঠক করে সুদীপের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তাপস। তিনি ইঙ্গিত করেন, সুদীপের কথাতেই তমোঘ্নকে উত্তর কলকাতা বিজেপির সভাপতি করা হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ ছিল, ‘দলনেত্রীর (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ভাবমূর্তিকে ব্যক্তিগত স্বার্থে কাজে লাগিয়ে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করার পাশাপাশি, বিরোধী দল বিজেপির সঙ্গে সুসম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছেন সুদীপ।’ তাপস বলেছিলেন, “তমোঘ্ন ও তাঁর পিতা তপন— উভয়েই সুদীপের ‘অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ’। এ বার দুর্গাপুজোয় তমোঘ্ন ঘোষের বাড়ির পুজোয় আমন্ত্রিত ছিলেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, শুভেন্দু অধিকারী ও কল্যাণ চৌবে। প্রত্যেকেই একই দিনে ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন।’’ যদিও তাঁদের মধ্যে কোনও বৈঠক হয়েছিল কি না, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তাপস।আর বৃহস্পতিবার এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তাপসের পাশেই দাঁড়িয়েছেন সৌগত।
প্রসঙ্গত, সৌগতর লোকসভার অন্তগর্তই তাপসের বিধানসভা বরাহনগর। তবে তাপসের আক্রমণ প্রসঙ্গে সুদীপ নিজের ছোট্ট প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, ‘হাতি চলে বাজার... কী একটা কথা আছে না। নো কমেন্টস।’ সঙ্গে একটি হাসির ইমোজিও পাঠিয়েছেন উত্তর কলকাতার সাংসদ তথা উত্তর কলকাতা জেলা তৃণমূলের সভাপতি।