মালদহে উঠছে নরবলির অভিযোগ। প্রতীকী চিত্র।
তন্ত্রমন্ত্র শিখতে ৯ বছরের শিশুকন্যাকে বলি দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে মালদহের চাঁচল থানার গৌড়হণ্ড এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা খুঁজে পান শিশুর মৃতদেহটি। এর পর কুড়ি বছর বয়সি বিক্রম ভগৎ নামে এক স্থানীয় যুবককে ওই কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তাঁরা আটক করে ব্যাপক মারধর করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে উদ্ধার করে চাঁচল থানার পুলিশ। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধ্যা থেকে খোঁজ মিলছিল না ওই শিশুটির। স্থানীয় বাসিন্দারা তার সন্ধান শুরু করেন এলাকা জুড়ে। এর মাঝেই বুধবার রাত ৯টা নাগাদ বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি পুকুরের পাড়ে পাওয়া যায় নাবালিকার রক্তাক্ত এবং ক্ষতবিক্ষত দেহ। তার গলার নলিকাটা হয়েছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বিক্রমের সঙ্গে শেষ বার দেখা গিয়েছিল ওই শিশুটিকে। সন্দেহের বশে তাঁরা বিক্রমকে ধরে মারধর করেন। অভিযুক্তের বাড়িও ভাঙচুর করা হয়। অচিন হালদার নামে স্থানীয় এক যুবকের কথায়, ‘‘বুধবার সন্ধ্যা থেকে মেয়েটাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ওর মা কান্নাকাটি করছিল। আমরা গ্রামের লোকজন মিলে খোঁজাখুঁজি শুরু করি। এর মাঝেই খবর আসে, বিক্রম মেয়েটার গলা কেটে ফেলে রেখেছে। বিক্রম তন্ত্রমন্ত্র শিখত। তাই মনে হচ্ছে, শিশুটিকে বলি দিয়েছে। তার আগে ওকে ধর্ষণও করেছে বলে মনে হচ্ছে। আমরা চাই ছেলেটার ফাঁসি হোক।’’
মৃতের এক আত্মীয় বলেন, ‘‘বাচ্চাটা বিকেলে খেলছিল। ছেলেটা মত্ত অবস্থায় ওকে তুলে নিয়ে যায়। সেটা আমরা দেখতে পাইনি। ও শিশুটিকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে খুন করে ফেলে রেখেছে। আমরা চাই ওর ফাঁসি হোক। ও তন্ত্রমন্ত্রের জন্য শিশুটিকে বলি দিয়েছে।’’
একই সুর সান্ত্বনা দাস নামে ওই গ্রামের এক মহিলারও। তিনি বলেন, ‘‘বিক্রমের বাবা তান্ত্রিক ছিল। ছেলেও তান্ত্রিক হয়েছে। বাচ্চাটাকে নিয়ে ও বলি দিয়েছে বলেই শুনছি। পুকুরের পাড়ে দেহটা পাওয়া গিয়েছে। গ্রামের লোকজন খুঁজতে খুঁজতে মেয়েটাকে পেয়েছে।’’
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান চাঁচলের এসডিপিও শুভেন্দু মণ্ডল এবং অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকরা। বিক্রমকে উদ্ধার করে ভর্তি করানো হয়েছে চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। শুভেন্দু বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পর জানা যাবে নাবালিকা উপর শারীরিক নির্যাতন হয়েছে কি না।’’ এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে তন্ত্রসাধনার মতো বিষয় জড়িয়ে রয়েছে কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাও।
মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব বলেন, ‘‘পুরো ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
নরবলি দেওয়ার পর দুই মহিলার মাংস খেয়েছিলেন কেরলের দম্পতি, এমনই সংবাদ সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে। এই কাণ্ডে ইতিমধ্যেই মহম্মদ সফি নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দম্পতি ভগবল সিংহ এবং লায়লাকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত সফি।