BJP Dharmatala Rally

‘ধর্মতলা সভার জায়গা নয়, ২১ জুলাই ব্যতিক্রম’! শাহের কর্মসূচির বিরোধিতায় যুক্তি রাজ্যের, হাই কোর্ট কী বলল?

২১ জুলাইয়ের সভাস্থলেই আগামী ২৯ নভেম্বর তাদের বিশেষ কর্মসূচি করার অনুমতি চেয়েছে বিজেপি। কিন্তু পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে আবেদন করা হলে তারা দু’বার ওই আবেদন ফিরিয়ে দেয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:০০
Share:

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

ধর্মতলায় ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে বছরে একটিই সভা হয়। সেটি শাসকদল তৃণমূলের ২১ জুলাইয়ের কর্মসূচি। তার মানে এই নয়, ওই এলাকা সভা করার জায়গা! এমন নয়, যে কেউ সেখানে সভা করতে পারবে! কলকাতা হাই কোর্টে এই যুক্তি দেখিয়েই ধর্মতলায় অমিত শাহের সভার বিরোধিতা করল রাজ্য।

Advertisement

২১ জুলাইয়ের সভাস্থলেই আগামী ২৯ নভেম্বর তাদের বিশেষ কর্মসূচি করার অনুমতি চেয়েছে বিজেপি। সেই সভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহকেও আনার পরিকল্পনা আছে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের। কিন্তু পুলিশের কাছে এ ব্যাপারে আবেদন করা হলে তারা সেই আবেদন দু’-দু’বার ফিরিয়ে দেয়। যুক্তি হিসাবে জানানো হয়, সভার জন্য জায়গাটি ফাঁকা নেই। পুলিশের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল পদ্ম শিবির। একক বেঞ্চ তাদের সভার ছাড়পত্র দিলে তার বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য। বৃহস্পতিবার সেখানেই রাজ্যের আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেন, ‘‘আগামী ২৯ নভেম্বর ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে সভা করতে চায় বিজেপি। ওই জায়গাটি কোনও কর্মসূচির জন্য নয়। শুধুমাত্র একটি কর্মসূচি করা হয়। গত ৩০ বছর ধরে তা-ই হয়ে আসছে।’’

উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গ যুব কংগ্রসের সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন এক মিছিলের উপর গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই গুলিতে মৃত্যু হয় ১৩ জনের। এর পরে ১৯৯৮ সালে মমতার নেতৃত্বে তৃণমূল গঠনের পর থেকেই ওই ১৩ শহিদকে স্মরণ করে প্রতি বছর ২১ জুলাই শহিদ দিবস পালন করে তৃণমূল। কিন্তু আদালতে রাজ্যের আইনজীবীর এই যুক্তি শুনে পাল্টা বিজেপি জানতে চায়, সভাস্থল না হওয়া সত্ত্বেও যদি রাজ্যের শাসকদল সেখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে পারে তবে তারা পারবে না কেন?

Advertisement

বিজেপির আইনজীবী বিল্বদল ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, ‘‘শাসকদল যেমন রাজনৈতিক কর্মসূচি করে। বিজেপিও তেমন করতে চায়। তা হলে অসুবিধার কী রয়েছে?’’

রাজ্যের এই যুক্তি শুনে এবং পাল্টা বিজেপির দাবি শোনার পর প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, আপাতত বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হচ্ছে না। তবে শুক্রবার প্রথমেই ওই মামলাটির শুনানি হবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে। আগামী ২৮ নভেম্বর বিজেপির কর্মসূচির আগের দিন এই মামলার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা ছিল। বুধবার সিঙ্গল বেঞ্চ তা নিয়ে এমনিতেই প্রশ্ন তুলেছিল। বৃহস্পতিবার রাজ্য এবং বিজেপি, দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতি মামলাটির শুনানি এগিয়ে আনেন। ফলে বিজেপির সভার চার দিন আগেই সভা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে যেতে পারে হাই কোর্টে।

এ দিকে, ধর্মতলায় বিজেপির সভা নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের একক বেঞ্চেও একটি মামলার শুনানি চলছিল। বৃহস্পতিবার সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও তা মুলতুবি হয়ে যায়। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের একক বেঞ্চ বুধবারই মামলাটির শুনানি মুলতুবি রেখে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের অপেক্ষা করছিল। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি শুক্রবার শুনবে বলে জানানোয়, বৃহস্পতিবার একক বেঞ্চও জানিয়ে দেয়, ‘‘শুক্রবার সকালে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি চূড়ান্ত হয়েছে। তাই আজ এই মামলার শুনানি হবে না। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় পরবর্তী শুনানি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement