West Bengal Madrasah Service Commission

১৪ বছর ধরে ফাঁকা ৩০০০ শূন্যপদ! রাজ্যকে অবিলম্বে নিয়োগ করতে নির্দেশ হাই কোর্টের, হল জরিমানাও

কলকাতা হাই কোর্টে ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্যের মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন। ২০১০ সালে হওয়া পরীক্ষার নিয়োগ প্রক্রিয়া ২০২৪ সালেও হয়নি দেখে আদালত জানিয়েছে, আর অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে না কমিশনকে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৪ ১৪:১৮
Share:

গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।

রাজ্যের মাদ্রাসাগুলিতে নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল ২০১০ সালে। তার পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৪ বছর কেটে গেলেও পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের চাকরি হয়নি। সম্পন্ন হয়নি কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়াই। মাদ্রাসায় এই মুহূর্তে ৩০০০ শূন্যপদ রয়েছে। সেই শূন্যপদে গত ১৪ বছরে নিয়োগ না হওয়া নিয়ে মামলা হয়েছিল হাই কোর্টে। বৃহস্পতিবার সেই মামলায় হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখে পড়ল রাজ্য। দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ বলে দিল, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য আর কোনও অতিরিক্ত সময় দেওয়া হবে না রাজ্যকে। আগামী তিন মাসের মধ্যে ওই তিন হাজার পদে নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে। পাশাপাশি, এত দিন ওই নিয়োগ না করার জন্য জরিমানাও দিতে হবে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং বিচারপতি প্রসেনজিৎ বিশ্বাসের ডিভিশন বেঞ্চে উঠেছিল মামলাটি। সেখানেই মামলাকারীর আইনজীবী গত ১৪ বছর ধরে ওই শূন্যপদে নিয়োগের ক্ষেত্রে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ‘টালবাহানা’র কথা তুলে ধরেন। অন্য দিকে, কমিশন জানায়, তারা ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নিয়ে নিয়োগ শুরু করতে চায়। কিন্তু সেই প্রস্তাব শোনামাত্র নাকচ করে দেন হাই কোর্টের দুই বিচারপতি। ডিভিশন বেঞ্চ বলে, ‘‘আর অতিরিক্ত কোনও সময় নয়, তিন মাসের মধ্যে আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে হবে কমিশনকে। এত দিন সময় নিয়েও নির্দেশ পালন না করার জন্য দু’লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে।’’

২০১০ সালে বাম আমলে মাদ্রাসার গ্ৰুপ-ডি পদে কর্মী নিয়োগের পরীক্ষা হয়। জানানো হয়, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ৩০০০ কর্মী নিয়োগ করা হবে। মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের বক্তব্য, সরকার চাকরি দিতে চায় না। তাই এ ব্যাপারে উদাসীন থেকেছে। সরকারের এই উদাসীনতার জন্য নিয়োগ করা যায়নি।

Advertisement

মামলাকারীরা আদালতকে জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার একক বেঞ্চ ওই শূন্যপদ ১৪ দিনের মধ্যে পূরণ করার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন। পরের বছর একক বেঞ্চের নির্দেশ বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু তার পরেও নিয়োগ হয়নি। সেই সময় কোভিড পরিস্থিতির কারণে নির্দেশ কার্যকর করার জন্য আদালতের কাছে ছ’মাস সময় চেয়েছিল কমিশন। সেই ছ’মাস পেরিয়ে গেলে কোভিডের কারণ দেখিয়েই আরও ছ’মাস সময় নেওয়া হয়। এ ভাবে বেশ কয়েক বার সময় নিয়েও তিন হাজার গ্ৰুপ-ডি পদে নিয়োগ করতে পারেনি মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন।

বৃহস্পতিবার দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত জানিয়েছে, একাধিক বার আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করা এবং বার বার সময় নিয়েও নির্দেশ পালন করতে না পারার জন্য মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনকে দু’লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে। একই সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে ওই তিন হাজার শূন্যপদে নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement