West Bengal SSC Recruitment Case

এসএসসি: এক জনেরই চাকরি বাতিল করল না ডিভিশন বেঞ্চ, তালিকা থেকে ছাড় শুধু সেই সোমাকেই

২০১৬ সালে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের (এসএলএসটি) পরীক্ষায় বসেছিলেন সোমা। সেই নিয়োগের মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয় হাই কোর্টে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪ ১২:০২
Share:

একা সোমারই চাকরি বহাল রইল। — ফাইল চিত্র।

এসএসসি মামলায় সোমবার রায় দিল কলকাতা হাই কোর্ট। চাকরি গেল প্রায় ২৬ হাজার ব্যক্তির। আদালত জানায়, ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় চাকরি পাওয়া সব প্রার্থীর নিয়োগ বাতিল। প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে কোনও চাকরির বৈধতা নেই। কিন্তু, এই প্যানেলে চাকরি পাওয়া একমাত্র সোমা দাসের চাকরি থেকে গেল। বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শাব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, ‘মানবিক কারণ’-এই সোমার নিয়োগ বাতিল করা হচ্ছে না।

Advertisement

সোমা দাসের আইনজীবী গোপা বিশ্বাস বলেন, ‘‘ক্যানসার আক্রান্ত সোমা চাকরির দাবিতে ধর্নায় বসেছিলেন। মানবিক কারণে তাঁর চাকরির জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করেছিলেন তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই মতো মন্ত্রিসভা ওই নিয়োগে অনুমোদন দেয়। এর সঙ্গে নিয়োগ প্রক্রিয়ার সরাসরি সম্পর্ক নেই।’’

যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকরি পাননি, এমন অভিযোগ তুলে দীর্ঘ দিন আন্দোলন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। ধর্মতলার গান্ধীমূর্তির সামনে ধর্নায় বসেন তাঁরা। সুবিচারের আশায় দিন কাটে তাঁদের। সেই ধর্নামঞ্চে দেখা গিয়েছিল বীরভূমের গ্রামের মেয়ে সোমাকে। চাকরির লড়াইয়ের সঙ্গে বাঁচার লড়াইও চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।

Advertisement

২০১৬ সালে নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের (এসএলএসটি) পরীক্ষায় বসেছিলেন সোমা। সেই নিয়োগের মেধাতালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয় হাই কোর্টে। তার মধ্যেই ২০১৯ সালে ক্যানসার ধরা পড়ে তাঁর। সে বছর ফেব্রুয়ারি থেকে ব্লাড ক্যানসারে ভুগছেন নলহাটির পাইকপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের আশ্রমপাড়া গ্রামের মেয়ে সোমা। কিন্তু লড়াই ছেড়ে দেননি তিনি। চাকরির দাবিতে রোদ, বৃষ্টি মাথায় নিয়ে অসুস্থ সোমা দিনের পর দিন কলকাতার রাস্তায় ধর্না, অবস্থান বিক্ষোভ করে গিয়েছেন।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ.

এসএসসি মামলায় প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসেও বার বার এসেছেন সোমা। মামলাকারীদের থেকেই সোমার শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পারেন প্রাক্তন বিচারপতি। সব শুনে রাজ্য সরকারের কাছে তিনি অনুরোধ করেছিলেন যাতে সোমাকে চাকরি দেওয়া হয়। প্রাক্তন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুরোধ রাখে সরকার। কমিশন সোমাকে নিয়োগ দেয়। ২০২২ সালে হাই কোর্টের অনুরোধ মেনে ক্যানসার আক্রান্ত সোমাকে চাকরির সুপারিশপত্র দেয় কমিশন। বীরভূমেই তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়। বীরভূমের নলহাটি-১ ব্লকের মধুরা হাই স্কুলে বাংলার শিক্ষক হিসাবে সোমাকে নিয়োগ করা হয়।

সেই থেকে ওই স্কুলেই চাকরি করছেন সোমা। তবে তিনি চাকরি পেলেও যাঁরা নিয়োগের জন্য লড়াই করছেন, তাঁদের পাশে ছিলেন। অসুস্থতা, চাকরি সামলেও ধর্নামঞ্চে এসেছেন তিনি বার বার। সোমবার রায়ে সেই সোমার নিয়োগ বাতিল করল না হাই কোর্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement